শুভ জন্মদিন কুমার বিশ্বজিৎ
বাংলা গানের ইতিহাসে কিছু নাম চিরকালীন। যাদের কণ্ঠ ছুঁয়েছে সময়কে, যাদের সুর জাগিয়েছে আবেগ, নস্টালজিয়া আর ভালোবাসা। এমনই একজন শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। আজ তার জন্মদিন। কণ্ঠশিল্পী, সুরকার, গীতিকার সব পরিচয় ছাপিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন এক সংগীত যোদ্ধা। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরের যে যাত্রা তিনি শুরু করেছিলেন, তা আজো সমানভাবে মুগ্ধ করে চলেছে পুরনো ও নতুন প্রজন্মকে। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
১৯৬৩ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের রাউজানে জন্ম নেওয়া কুমার বিশ্বজিৎ ছোটবেলা থেকেই ছিলেন সুরের নেশায় বুঁদ। বাবার কাছ থেকে গান শিখেছিলেন। কৈশোরেই হাতে তুলে নেন গিটার, আর তখন থেকেই শুরু সংগীত জীবনের পথচলা।
-
১৯৭৭ সালে ‘রিলেশন’ ব্যান্ডের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশাদার সংগীতে প্রবেশ। এরপর গড়েন নিজস্ব ব্যান্ড ‘ফিডব্যাক’।
-
তবে ১৯৮১ সালে সলো ক্যারিয়ারে প্রবেশের পরই খুলে যায় নতুন দিগন্ত। ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘তুমি আর নেই সে তুমি’-এমন অসংখ্য গান বাঙালির হৃদয়ে অমর হয়ে আছে তার কণ্ঠে।
-
বাংলা আধুনিক গানে কুমার বিশ্বজিৎ এক নতুন স্বাদ এনেছিলেন। তার গলায় প্রেম মানে ছিল গভীরতা, শুদ্ধতা আর আবেগের স্নিগ্ধ ছোঁয়া। ‘তুমি যেই যাও সেজে’, ‘তোর চোখে আমি হারিয়ে যাই’, ‘তুমি রোজ বিকেলে আমার বাগানে’-এসব গান শুধু গানের তালিকায় পড়ে না, পড়ে শ্রোতার জীবনের গল্পে।
-
আজও তার গান বেজে ওঠে রেডিও, স্টেজের উষ্ণতায় কিংবা প্রেমে পড়া এক তরুণের মুখে।
-
শুধু কণ্ঠে নয়, কুমার বিশ্বজিৎ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন গীতিকার ও সুরকার হিসেবেও। তিনি বহু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন, দিয়েছেন সুর। ‘সুইটি’, ‘ডাক দিয়ে যাই’, ‘দোলা’, ‘মনের মাঝে তুমি’-বাংলা চলচ্চিত্রের বহু জনপ্রিয় গানের নেপথ্যে ছিল এই সুরময় মানুষের হাত।
-
তার চলার পথটি শুধুই মসৃণ ছিল না। তিনি নানা সময় বিতর্কে জড়িয়েছেন, কিন্তু গানের ভুবনে কখনো থেমে যাননি। ব্যক্তিগত ক্ষত, পেশাগত প্রতিযোগিতা, শিল্পী সংঘের জটিলতা-সবই সামলে সুরে থেকেছেন অবিচল।
-
যেখানে বহু শিল্পী হারিয়ে গেছেন সময়ের স্রোতে, কুমার বিশ্বজিৎ রয়ে গেছেন নিজস্ব জায়গায় অবিচল। শুধু ষাট, সত্তরের প্রজন্ম নয়, আজকের তরুণরাও তার গানে খুঁজে পান ভালোবাসা, অনুভব, স্মৃতি।