সালি হকিন্স: চোখের ভাষায় হৃদয়ের গল্প বলা এক অভিনেত্রী
চোখের ভাষা যে কখনো কখনো মুখের শব্দকে হার মানায়, তা প্রমাণ করেছেন ব্রিটিশ অভিনেত্রী সালি হকিন্স। ১৯৭৬ সালের ২৭ এপ্রিল লন্ডনের ডুলউইচে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী যেন পর্দায় আবেগের নিরব ধারাকে একটি নতুন মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
-
তার অভিনয়ে নেই বাহুল্য, নেই অতিনাটকীয়তা; আছে শুধু এক গভীর মানবিক স্পর্শ, যা দর্শকের হৃদয়ে নীরবে দোলা দিয়ে যায়।
-
সালি হকিন্সের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল থিয়েটার দিয়ে, তবে খুব দ্রুতই টেলিভিশন ও বড় পর্দায় নিজের দক্ষতা তুলে ধরেন।
-
তার অভিনয়ের প্রকৃত উত্থান ঘটে মাইক লি পরিচালিত ২০০৮ সালের ছবি ‘হ্যাপি গো লাকি’ দিয়ে। সে ছবিতে পপি চরিত্রে তার অনবদ্য, প্রাণবন্ত অভিনয় তাকে এনে দিয়েছে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার। পপির প্রাণোচ্ছলতা, জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব এবং মানবিক সৌন্দর্য ফুটে উঠেছিল তার চোখের গভীরতায়, হাসিতে, আর সংলাপের মাঝের ক্ষণিক নীরবতায়।
-
সালি হকিন্সের অভিনয়ের সবচেয়ে চমকপ্রদ দৃষ্টান্ত নিঃসন্দেহে ২০১৭ সালের ‘দ্যা শেপ অফ ওয়াটার’। গুইলারমো দেল তোরোর এই ফ্যান্টাসি ড্রামায় তিনি মুখ্য চরিত্র এলিসার ভূমিকায় অভিনয় করেন। এক বোবা এবং কানে শোনা অসমর্থ নারী, যিনি এক অদ্ভুত জলজ প্রাণীর সঙ্গে ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়েন।
-
এই ছবিতে তার একটিও সংলাপ নেই, কিন্তু প্রতিটি দৃশ্যে তার চোখ, মুখের অভিব্যক্তি, শরীরী ভাষা এমনভাবে কথা বলে যে, শব্দের প্রয়োজনই পড়ে না। তার এই অভিনয় অস্কার মনোনয়ন এনে দেয় এবং অভিনয়ের সংজ্ঞাকে যেন নতুন রূপ দেয়।
-
তিনি শুধু একজন অভিনেত্রী নন, বরং একজন ভাষাহীন কাব্যকার; যিনি তার প্রতিটি চরিত্রে আবেগের গাঢ়তা, অনুভবের তীব্রতা এবং বাস্তবতার ছায়া বুনে দেন নিখুঁতভাবে।