রাজপরিবারের নীরব শক্তি প্রিন্স ফিলিপ
রাজপরিবারের ইতিহাসে নানা নাম ও পদ আছে, কিন্তু কখনো কখনো সবচেয়ে বড় অবদান রাখতে হয় এমন একজনের, যিনি আভাসহীনভাবে, নিঃশব্দে পাশে থেকে শক্তি যুগিয়ে যান। প্রিন্স ফিলিপ (ডিউক অফ এডিনবরো) ছিলেন ঠিক এমনই একজন, যিনি নিজের জীবনের অধিকাংশ সময় পার করেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পাশে। রাজনীতি, পারিবারিক দায়িত্ব ও জনসেবায় তার অবদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যদিও সে কখনো নিজের নামের আলোকে মুখরোচকভাবে সামনে আসেননি। আজ সেই নীরব শক্তির জন্মদিন। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
-
১৯২১ সালের এই দিনে গ্রিসের কোরফু দ্বীপে জন্ম তার। তার পুরো নাম ছিল ফিলিপ মাউন্টব্যাটেন। রাজবংশের সন্তান হলেও তার জীবন ছিল নানা উত্থান-পতন আর যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়া, যা পরবর্তীতে তাকে ব্রিটেনের দীর্ঘদিনের রাজপরিবারের স্তম্ভে পরিণত করে।
-
ফিলিপের জন্ম আধুনিক ইউরোপের এক জটিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। তিনি ছিলেন গ্রিস ও ডেনমার্কের রাজতন্ত্রের অংশ। ছোট বেলা থেকেই পরিবারে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিতাড়নের মুখোমুখি হন।
-
তার বাবা প্রিন্স অ্যান্ড্রিউ এবং মা, গ্রেসিনা স্টেফানিডিস ছিলেন রাজতন্ত্রের মধ্যে থাকা মানুষ হলেও গ্রিসের রাজত্ব থেকে পরিবারকে বিতাড়িত হতে হয়েছিল। তাই ছোট বয়স থেকেই ফিলিপ নানা দেশে বেড়ে উঠেন, যার ফলে তার জীবনে বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক প্রভাব পরেছিল।
-
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনে সামরিক ক্যারিয়ার শুরু করেন ফিলিপ। ১৯৪৭ সালে তিনি বিখ্যাত এলিজাবেথ (বর্তমানে রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়) এর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারে এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি তখন ‘ডিউক অফ এডিনবরো’ খেতাব পান।
-
প্রিন্স ফিলিপ ছিলেন রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়র জীবনে এক অদৃশ্য শক্তি ও পরামর্শদাতা। রানি ও তার পরিবারের নানা দিকনির্দেশনায় ফিলিপের অবদান ছিল অপরিসীম। বিশেষ করে রাজপরিবারের আধুনিকায়নে তিনি ছিলেন একজন উদ্ভাবক ও অনুপ্রেরণার উৎস।
-
বৃদ্ধ বয়সে নানা শারীরিক সমস্যার মধ্যেও প্রিন্স ফিলিপ ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতি তার দায়বদ্ধতা বজায় রেখেছিলেন। ২০২১ সালের ৯ এপ্রিল ৯৯ বছর বয়সে লন্ডনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী শোকের ছায়া নেমে আসে।