শ্রেষ্ঠত্বের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছেন যিনি, তিনিই কিম ক্লাইস্টার্স
টেনিস কোর্টে জয়ের উল্লাস কিংবা পরাজয়ের অশ্রু-দুটোই নিঃশব্দে প্রকাশ করতেন কিম ক্লাইস্টার্স। ১৯৮৩ সালের এই দিনে বেলজিয়ামের বিলজেন শহরে জন্ম নেওয়া এই টেনিস তারকা শুধুমাত্র খেলার মাঠে নয়, নারী খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করে গেছেন জীবনের প্রতিটি বাঁকে। শুধু জয় নয়, শ্রেষ্ঠত্ব কীভাবে মর্যাদার সঙ্গে বহন করতে হয়, সেই পাঠ তিনি দিয়েছেন নিজ হাতে। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা যেন জন্মসূত্রে পাওয়া কিম ক্লাইস্টার্সের। তার বাবা লিও ক্লাইস্টার্স ছিলেন পেশাদার ফুটবলার এবং মা এলসে ক্লাইস্টার্স ছিলেন জিমন্যাস্ট। ফলে ছোটবেলা থেকেই কিমের বেড়ে ওঠা হয়েছিল খেলার মাঠ আর অনুশীলনের ঘ্রাণে। মাত্র ৫ বছর বয়সে হাতে র্যাকেট ধরা এই কন্যা দ্রুতই বেলজিয়ান টেনিসের প্রতিভা হিসেবে চিহ্নিত হন।
-
১৯৯৯ সালে কিম পেশাদার টেনিসে পা রাখেন। তার খেলার ধরন ছিল গতিময়, সব কোর্টে খাপ খাওয়ানো আর ডিফেন্স-অফেন্সের মিশেলে চমৎকার ভারসাম্যপূর্ণ। ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে পৌঁছে যান তিনি (ফ্রেঞ্চ ওপেন), যদিও সেবার জয় আসেনি।
-
২০০৫ সালে তিনি জেতেন তার প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ইউএস ওপেন। এরপর আর থেমে থাকেননি। মোট চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা (তিনটি ইউএস ওপেন ও একটি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন) যুক্ত হয়েছে তার নামের পাশে।
-
২০০৭ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে টেনিস থেকে অবসর নেন কিম। বিয়ে করেন এবং এক কন্যাসন্তানের মা হন। সবাই ভেবেছিল, হয়তো এখানেই শেষ। কিন্তু ২০০৯ সালে কিম ক্লাইস্টার্স কোর্টে ফিরে আসেন একেবারে নতুন রূপে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ফেরার প্রথম বছরেই ইউএস ওপেন জয় করেন তিনি। এটাই ছিল নারীর ক্ষমতায়নের এক অনন্য বার্তা ‘মাতৃত্ব মানে বিরতি, শেষ নয়’।
-
কোর্টে তার আচরণ, প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মানবোধ এবং জয়ের পর শালীনতা সব মিলিয়ে কিম ক্লাইস্টার্স ছিলেন খেলাধুলায় মর্যাদার প্রতীক। তিনি কখনোই নিজেকে ‘সুপারস্টার’ ভাবেননি। বরং খেলাটাকে ভালোবেসে, প্রতিটি ম্যাচে আত্মনিবেদন করে গেছেন চুপচাপ।
-
২০১২ সালে আবারও অবসর নেন কিম। কিন্তু খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা তাকে থামতে দেয়নি। ২০২০ সালে, দীর্ঘ বিরতির পর ফের কোর্টে ফেরার ঘোষণা দেন। যদিও সে সময় ইনজুরি ও কোভিড পরিস্থিতির কারণে নিয়মিত খেলা সম্ভব হয়নি, তবুও তার চেষ্টা ছিল অনুপ্রেরণামূলক।