নির্বাচনে বেশুমার টাকার খেলা বন্ধ চায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:২৯ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন/ছবি: জাগো নিউজ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেশুমার টাকার খেলা বন্ধ করার দাবি তুলেছে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। এজন্য দলটি নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

এসময় দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী বলেন, নির্বাচনের জন্য যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন এখন পর্যন্ত তা দেখা যাচ্ছে না। সারাদেশের যে বাস্তব পরিস্থিতি তা দেখে জনমনে নির্বাচন নিয়ে সংশয়, উদ্বেগ ও আশঙ্কা ক্রমেই আরও বেড়ে চলেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনি প্রচার, সভা-সমাবেশকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা সংঘটিত হচ্ছে, তা রীতিমতো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিরই প্রমাণ।

তিনি বলেন, কোনো কোনো এলাকায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া, গোলাগুলির মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে। একেকজন প্রার্থী এরই মধ্যে হাজার হাজার বিলবোর্ড, ফেস্টুন, নানা রংয়ের পোস্টার সাঁটিয়ে কোটি কোটি টাকাও খরচ করেছেন। নানা রকম লোভ-প্রলোভন দেখিয়ে, অগ্রিম মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করে ভোটের আগেই বেশুমার টাকা খরচ করে ফেলেছেন। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে।

বহ্নিশিখা জামালী জানান, অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা হলো বেশুমার টাকার খেলা। আগে যে মনোনয়নপত্রের জামানত ছিল কুড়ি হাজার টাকা, সেটা বাড়িয়ে এবার ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর নির্বাচনি ব্যয় যেখানে ২৫ লাখ টাকা নির্ধারিত করা ছিল, সেটাও বাড়িয়ে যা করা হয়েছে তাতে আগামীতে সৎ এবং দেশপ্রেমিক মানুষের পক্ষে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী জাতীয় সংসদও কালো টাকার মালিক, ব্যবসায়ী আর রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মাফিয়াদের ক্লাবে পরিণত হবে। এটা হবে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের বিরাট পরাজয়।

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধ করতে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ধর্মের ব্যবহার, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস, মাস্তানি, জবরদস্তি, জবরদখল বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতেও নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ১৭ বছর ধরে দেশের মানুষ যে নির্বাচনের অপেক্ষা করছে তাকে কোনোভাবে বিতর্কিত করা যাবে না। অতীতের মতো আগামী নির্বাচনও যদি বিতর্কিত হয় তাহলে পরবর্তী সংসদ ও সরকারও বিতর্কিত হবে, দেশে-বিদেশে সরকারের গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তা যাতে না হয় তার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। আর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান, রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে কোনোভাবেই আমরা যেন সহিংসতা আর জবরদখলের পর্যায়ে নিয়ে না যাই।’

এসময় জানানো হয়, আগামী ১২ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনয়ন ফরম দেওয়া শুরু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিকদার হারুন মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরী, যুবরান আলী জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেআর/একিউএফ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।