গণভোট-ভোট একই দিনে ‘নতুন দিগন্ত’ দেখছে বিএনপি: ফখরুল
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আজকের জাতির উদ্দেশে দেওয়া তফসিল ঘোষণায় ‘আশ্বস্ত’ হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে- নির্বাচন কমিশন, সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চায় এবং জনগণের ভোটাধিকার বাস্তবায়নে নিশ্চিত ভূমিকা রাখতে চায়।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তফসিল ঘোষণায় আমরা মোটামুটিভাবে সন্তুষ্ট। কিছু শব্দের এদিক-ওদিক থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো বড় বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো- ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
তার মতে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা এখন নির্বাচন কমিশনের মূল দায়িত্ব। একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সব রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী নির্বাচনকে ‘একটি উৎসবমুখর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’তে রূপ দেবেন।
গত ১৫ বছর দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে, গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আজ নতুন করে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এবার জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি সত্যিকারের পার্লামেন্ট গঠন সম্ভব হবে।
গত নয় মাস ধরে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় নানা সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। অনেক বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। কিছু বিষয়ে একমত হতে না পারলে সেগুলো গণভোটে আসবে, বলেন তিনি।
প্রার্থী তালিকা নিয়ে জোটের সঙ্গে বোঝাপড়ার অভাব আছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের কোনো সমস্যা নেই। রাজনৈতিক দলে এমনটা থাকেই। আমরা এখনও চূড়ান্ত তালিকা দিইনি। প্রাথমিক তালিকা বলেছি মাত্র। প্রার্থিতা প্রায় চূড়ান্ত।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে যুগপৎ অংশ নেওয়া দলগুলোর সঙ্গে মূল্যায়ন ও আলোচনা অব্যাহত। কোনো সমস্যা হবে না। যারা আন্দোলন করেছেন, তারা যথাযথ মূল্যায়ন পাবেন। আমরা আশাবাদী সবাই ঐক্যবদ্ধভাবেই নির্বাচনে অংশ নেব।
গণভোটে চারটি প্রশ্নের উত্তর একসঙ্গে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কিছুটা সমস্যা হবেই। এতে সন্দেহ নেই। তবে সবাই মিলে কাজ করলে আমরা তা উত্তরণ করতে পারব।
গণভোটে বিএনপি প্রচারণা চালাবে কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত। সময় এলে জানানো হবে। আমরা তো শুরু থেকেই একই দিনে নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কোন প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলবে বিএনপি-এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, এটা এখন বলা যাবে না। আলোচনার পরই ভোটারদের কাছে যাব।
অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রতীক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে আজ অত্যন্ত আনন্দের দিন। আমি শুরুতেই বলেছি- আমরা আশ্বস্ত। আমি বরাবরই বলেছি, নির্বাচন হবে কি হবে না- এ নিয়ে আমার কোনো সংশয় ছিল না। নির্বাচন হতেই হবে। সেটাই হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ নির্বাচন হবে।
তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের নতুন দিগন্ত এই নির্বাচনের মাধ্যমেই উন্মোচিত হবে।
কেএইচ/এমআরএম