হাদির ওপর হামলা গণতন্ত্রের ওপর আঘাত: মির্জা আব্বাস
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনাকে গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, হাদি আমার সন্তানের মতো। তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে আমি মানসিকভাবে আহত হয়েছি। এ হামলা শুধু একজন ব্যক্তির ওপর নয়, এটি গণতন্ত্রের ওপর আঘাত।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস। ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যেই একটি দল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা ছড়াতে পোস্ট দিতে শুরু করে। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি, পুরো ঘটনাটি পরিকল্পিত। আমি ঢাকার মানুষ, প্রায় ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করছি। আমি শান্ত ছিলাম। যদি আমি নির্দেশনা দিতাম, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, তারা হাদির সমর্থক নয়। তারা অন্য একটি রাজনৈতিক দলের লোক। আমরা শান্ত না থাকলে হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হতো। তারা চেয়েছিল চিকিৎসা ব্যাহত করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে।
রাষ্ট্র অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, একটি দল অতীতেও ৭১, ৮৬-সহ নানা সময়ে ষড়যন্ত্র করেছে। এদের মূল শক্তিই ষড়যন্ত্র। তারা স্থিতিশীল রাষ্ট্র সহ্য করতে পারে না, সবসময় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়।
ঢাকা-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত এই প্রার্থী আরও বলেন, একজন মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে—সে যেই হোক, আমি তার মৃত্যু কামনা করি না। কিন্তু হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এক থেকে দেড় শ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মব তৈরির উসকানি দিয়েছে। তারা সবাই একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। আমি ১৯৭৭ সাল থেকে নির্বাচন করছি। কখনো কারও সঙ্গে মারামারি করিনি। নির্বাচনেও আমরা কোলাকুলি করেছি, একসঙ্গে খেয়েছি। কিন্তু মারামারি আর সহিংসতা করে একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক দল।
হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা চাই, হাদির ওপর হামলাকারীরা গ্রেফতার হোক এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হোক।
হাদির রাজনৈতিক ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, হাদি আমার নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সে একজন প্রতিযোগী। সে রাজপথের সাহসী সৈনিক। আমি আশা করি, সুস্থ হয়ে সে আবারও রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, শেখ রবিউল আলম, হাবিবুর রশিদ হাবিব, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল কবির পল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর ও ফকিরাপুল মোড় ঘুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
কেএইচ/এমএমকে/এমএস