জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাদি, অথচ এখনো হয়নি মামলা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি। হাদি বর্তমানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি। তার শারীরিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান এ তথ্য জানান।
জাগো নিউজকে তিনি বলেন, এখনো মামলা হয়নি। হাদির আত্মীয়-স্বজন হয়তো সবাই হাসপাতালে আছেন। তারা থানায় এলেই মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
ওসমান হাদির হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে পারলে সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদি হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামিদের ধরিয়ে দিতে পারলে তার জন্য সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। আপনারা সবাই ওসমান হাদির জন্য দোয়া করবেন, উনি ক্রিটিক্যাল কনডিশনে আছেন। আমাদের সবার দোয়ায় আল্লাহ দিলে উনি আবার ফিরে আসতে পারবেন।
তিনি বলেন, ওসমান হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো ধরনের অপচেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।
ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড এক বিবৃতিতে জানায়, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেহেতু সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপ সম্পন্ন হয়েছে, তাই বর্তমানে তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব সাপোর্ট চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে পুনরায় ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, তার ফুসফুসে ইনজুরি বিদ্যমান রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা আপাতত চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস প্রতিরোধের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে। কিডনির কার্যক্ষমতা বর্তমানে ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখার জন্য পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভির ফুটেজ ও পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য বলছে, দুপুর ২টা ২০ মিনিটে গুলি করার শব্দ শোনা যায়। এর কয়েক সেকেন্ড পর মোটরসাইকেলে করে দুই যুবক দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পুলিশ বলছে, তিনটি মোটরসাইকেলে করে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থলে আসে। এর মধ্যে একটি মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। তিনি এ সময় রিকশায় করে যাচ্ছিলেন।
টিটি/এএমএ/জেআইএম