মানা হচ্ছে না কোনো নিয়ম, শঙ্কার মুখে পিএসএল
নিবিড় জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে আয়োজিত হচ্ছে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। কিন্তু সেই জৈব সুরক্ষা বলয়ই এখন হয়ে পড়েছে অরক্ষিত। এর বড় কারণ, টুর্নামেন্ট সংশ্লিষ্টদের করোনাবিধি না মানার অত্যধিক প্রবণতা। যে কারণে এরই মধ্যে বলয়ের মধ্যে থাকা চারজনের শরীরে ধরা পড়েছে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি।
সোমবার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের অস্ট্রেলিয়ান লেগস্পিনার ফাওয়াদ আহমেদ। যে কারণে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ও কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরসের মধ্যকার সোমবারের ম্যাচটি পিছিয়ে দেয়া হয়েছে একদিন। সেটি খেলা হবে আজ (মঙ্গলবার) রাত ৮টায়।
আজকের ম্যাচ শুরুর আগে আরও দুঃসংবাদ পেয়েছে পিএসএল। মঙ্গলবার করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছেন আরও তিনজন। এর মধ্যে দুইজন বিদেশি খেলোয়াড় এবং একজন লোকাল টিম স্টাফ। এ তিনজনের নাম প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ। তবে জানা গেছে, দুই খেলোয়াড়ের একজন আবার ফাওয়াদের ইসলামাবাদের সতীর্থ।
এমতাবস্থায় পিএসএল নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) মিডিয়া ডিরেক্টর সামিউল হাসান জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত পিএসএল নিয়ে নেতিবাচক কোনো ভাবনা আসেনি। পূর্ব নির্ধারিত সূচিতেই চলবে সব খেলা। এমনকি আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত সব ম্যাচে ৫০ শতাংশ দর্শক প্রবেশ করতে দেয়া হবে।
পিসিবির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হলেও, জনপ্রিয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো জানাচ্ছে, কোনো একটি নির্দিষ্ট দলের পাঁচজন খেলোয়াড় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তখন ম্যাচ বা টুর্নামেন্টের ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতেও পারে। এ পর্যন্ত ইসলামাবাদের দুইজন খেলোয়াড় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়লে তখন বাতিলও হয়ে যেতে পারে পিএসএলের এবারের আসর।
কিন্তু জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যেও কেনো হলো করোনার সংক্রমণ? এর উত্তর জানাচ্ছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো। তাদের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পিএসএলে জৈব সুরক্ষা বলয় রাখা হলেও, সেটি মূলত নামকা ওয়াস্তে। কেননা নিয়মের তোয়াক্কা করেন না কেউ, সবাই যে যার মতো চলাফেরা করছেন বলয়ের বাইরে-ভেতরে।
পাকিস্তানের ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকেট পাকিস্তানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকজন ক্রিকেটারের পরিবারের সদস্যদের কোনোরকম কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই জৈব সুরক্ষা বলয়ে ঢুকতে দেয়া হয়েছে। খেলোয়াড় ও অন্যান্য সদস্যদের জন্য খাবারও আসছে বাইরে থেকে।
একটি দলের কর্মকর্তা নাম প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, মাঠের দায়িত্বে থাকা মাঠকর্মী এবং হোটেলের স্টাফরা জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে নেই। এমতাবস্থায় যে কেউই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। কেননা জৈব সুরক্ষা বলয়টা মূলত নিজেদের মনকে বুঝ দিতে করা।
গত বছর পিএসএলের প্লে-অফ ম্যাচের ১২ জনের মাঝে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল। চলতি আসরে এটি আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যা বিদেশি খেলোয়াড়দের মনে বাড়াচ্ছে দুশ্চিন্তা।
তবে এই অবস্থা মোকাবিলায় এখন থেকে প্রতি চারদিন পরপর ক্রিকেটার, তাদের পরিবার, কর্মকর্তা এবং দলের মালিকদের পিসিআর টেস্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিসিবি।
এসএএস/এমকেএইচ