ক্ষুব্ধ লিটনের উল্টো প্রশ্ন, আপনারা পেছনের কথা টানেন কেন?
ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মেই কী রয়েছেন লিটন দাস? আবার রনি তালুকদারের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতেও বেশ উপভোগ্য ব্যাটিং করছেন তিনি। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ যখন ওপেনিং জুটির সমস্যায় ভুগছিল দীর্ঘদিন, তখন লিটন-রনির জুটি যেন সেখানে উষ্ণ মরুর বুকে কয়েকফোটা বৃষ্টির মতো।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে লিটন দাস এবং রনি তালুকদার মিলে গড়েন ১২৪ রানের রেকর্ড জুটি। ৪১ বলে ১০ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ৮৩ রান করেন লিটন দাস। ৭৭ রানের বিশাল জয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও ওঠে লিটনের হাতে।
ম্যাচ শেষে সেরা ব্যাটার লিটন দাসকেই পাঠানো হয় সংবাদ সম্মেলনে দলের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য। সেখানে সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নে বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান লিটন দাস। ম্যাচ জয়ের অনুভূতির কথা জানতে চাইলে কিছুটা ক্রুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘বললাম তো ভালো।’
এ ধরনের ঝাঁঝ মেশানো মেজাজ দেখানোই নয় শুধু, লিটন দাসের কাছে রেকর্ডের কথা জানতে চাইলে তিনি মেজাজ চড়া রেখেই বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, কখনোই রেকর্ড নিয়ে চিন্তাও করি না।’
বাংলাদেশ দলের ওপেনিং জুটির সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। আগেও জুটির অন্যতম সদস্য ছিলেন লিটন। এখন রনি তালুকদারকে নিয়ে একটা ভালো জুটি গড়ে তুলছেন। কিভাবে সম্ভব হলো। জুটির এপ্রোচ কিভাবে বদলালেন? ব্যাপারটা কি এমন যে উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী বদলালো, আর পারফরম্যান্সও পরিবর্তন হয়েছে?
এই প্রশ্নেই প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালেন লিটন। নতুন জুটির সঙ্গে অতীতকে টেনে তুলনা করার প্রশ্নটাই পছন্দ হয়নি তার। এ কারণে অনেকটা ঝাঁঝের সঙ্গে প্রশ্নকর্তার কাছে লিটন উল্টো জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনারা যে কোনো সময় যখন প্রশ্ন করেন, পেছনের কথা কেন টানেন? নতুন যে জিনিসটা হচ্ছে, এটা কি ভালো লাগছে না? দুই বছর, এক বছর আগের জিনিস টানার তো কোনো দরকার নেই। এখন ভালো খেলছি। এই জুটিটা কতটা যেতে পারে, দেখি।’
ভালো খেলে ৮৩ রান করেছেন, আগের ম্যাচেও ভালো ব্যাটিং করেছেন। মূলতঃ ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছেন লিটন, তাই বলে সংবাদ সম্মেলনে তার এমন আচরণে বিস্মিতই হয়েছেন সাংবাদিকরা। পরের প্রশ্নে অবশ্য আর ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাননি বাংলাদেশ দলের এই ওপেনার।
সঙ্গী হিসেবে রনি কেমন? এ বিষয়টা জানতে চাইলে লিটন জানান, রনির সাথে ব্যাট করে তিনি সন্তষ্ট। তার ভাল লাগছে। সঙ্গী রনির ব্যাটিংও তিনি উপভোগ করছেন। তাই মুখে এমন কথা, ‘তার (রনির) সাথে ব্যাটিং করে অনেক মজা পাচ্ছি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘যে শুরুটা আমরা এনে দিয়েছি, আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে এটাই সর্বোচ্চ। এরচেয়ে বড় কিছু তো আর হতে পারে না। এখন টানা প্রতিটা ম্যাচেই আপনি এই সাফল্য পাবেন না যে যাবো আর দুইজনই হিট করা শুরু করব। এমন সময় আসবে যে, ভুগতে হবে।’
আউটের আগে বল মিস হচ্ছিল, কিছুটা ছটফট করছিলেন- এ বিষয়টা স্বীকার করে নেন লিটন নিজেও। তার মনে হলো, ছটফট না করলে সেঞ্চুরিটা হয়ে যেতো হয়তো। লিটন বলেন, ‘আমার মনে হয় খুব তাড়াহুড়ো করছিলাম। মাঝখানে স্পিনাররা খুবই ভাল বল করছিল। উইকেটও হেল্প করেছে তাদের। আমি যদি আরেকটু সময় নিয়ে তাদের বলগুলো খেলতাম তাহলে ৮৩ বা ৮৪ এর জায়গায় (আসলে ৮৩) ১০০ হতো।'
আইএইচএস/