অনূর্ধ্ব-১৭ দলের অধিনায়ক অর্পিতা

‘সাফ আর প্রীতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে জর্ডানে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

অনূর্ধ্ব-১৭ দল দিয়ে ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক নারী ফুটবলে অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের। সেবার দক্ষিণ কোরিয়ায় বসেছিল এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসর। অভিষেক আসরেই ছিল বাংলাদেশের উপস্থিতি।

ওই আসরে খেলার জন্য কোনো বাছাই ছিল না। বাংলাদেশ সরাসরিই খেলেছিল এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে। দেশে তখন নারী ফুটবলের হাতেঘড়ি। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছিল। গ্রুপে তিন ম্যাচের তিনটিই হেরেছিল। ২৮ গোল হজম করে প্রতিপক্ষের জালে দিয়েছিল দুটি। এর মধ্য জাপানের কাছেই বাংলাদেশ খেয়েছিল ২৪ গোল।

এরপর অনেক পানি গড়িয়েছে। এই টুর্নামেন্ট কখনো অনূর্ধ্ব-১৬, কখনো অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সেরও হয়ে আসছিল। প্রথম আসর অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সের হওয়ার পর টানা ৭ আসর হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ নামে। ২০২২ সাল থেকে এই টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব-১৭ নারী এশিয়ান কাপ নামে থিতু হয়েছে এবং সেটা ফিফার টুর্নামেন্টের সাথে সামঞ্জস্য রেখে।

২০০৫ সালে অনুর্ধ্ব-১৬ দল সরাসরি ও ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ দল বাছাই পর্ব টপকে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছিল। এ ছাড়া এই বয়সভিত্তিক আসরে বাংলাদেশের চূড়ান্ত পর্বে খেলা হয়নি আর। গত আসরে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের মেয়েরা বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেও আর পারেনি। বাছাইয়ের প্রথম পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় পর্বে উঠেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় পর্বে গ্রুপে সবার নিচে থেকে বিদায় নিয়েছিল মেয়েরা।

২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার পর আবার কি বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবল 'দল এশিয়ার সর্বোচ্চ মঞ্চে খেলতে পারবে? সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে এ মাসেই জর্ডানে। আগামী বছর চীনে অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব-১৭ নারী এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে বাংলাদেশ পড়েছে ‘এইচ’ গ্রুপে। খেলা হবে জর্ডানে। গ্রুপে অন্য দলটি চাইনিজ তাইপে।

এ বছর বাংলাদেশ জাতীয় ও অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দল এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেছে। এবার অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সামনে দ্বিতীয়বার শীর্ষ পর্যায়ে খেলার সুযোগ। সেই লক্ষ্য নিয়ে রোববার কিশোরী ফুটবল দল যাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে জর্ডান যাবে। সাইফুল বারী টিটুর দলটি দুবাইয়ে ম্যাচ খেলবে স্বাগতিক আরব আমিরাত ও সিরিয়ার বিপক্ষে।

মধ্যপ্রাচ্যে যাত্রার আগে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারপার্সন মাহফুজা আক্তার কিরণ, দলের প্রধান কোচ সাইফুল বারী টিটু ও অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস। কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেছেন, ‘আমাদের দল মানসিকভাবে বেশ এগিয়ে। বাছাইয়ে আমাদের গ্রুপে থাকা দুই দল জর্ডান ও চাইনিজ তাইপে বেশ এগিয়ে। ইউটিউবে জর্ডানের মেয়েদের একটা ম্যাচের হাইলাইটস দেখেছি। ওরা পাওয়ারফুল দল। প্রথম ম্যাচই আমাদের জর্ডানের সঙ্গে। প্রথম ম্যাচটি ওই দুই দলের খেলা হলে তাদের শক্তিমত্তা দেখে নিতে পারতাম। যাইহোক আমাদের মেয়েরাও অনেক স্ট্রং।’

অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস বলেছেন, ‘সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও দুবাইয়ে হতে যাওয়া দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। আমাদের প্রস্তুতি ভাল। সর্বশেষ সাফে ভাল খেলেছি। দুবাইয়েও শিখবো। সেগুলো জর্ডানে কাজে লাগাবো।’

এ বছর বাংলাদেশের নারী ফুটবলের ওপর দিয়ে সু্বাতাসই বইছে। জাতীয় ও অনূর্ধ্ব-২০ দল এশিয়ান কাপে উঠে ইতিহাস গড়েছে। বাছাই পর্ব টপকাতে পারলে ইতিহাস হবে অনূর্ধ্ব-১৭ দলেরও। তবে তাদের ইতিহাস হবে যে কোনো পর্যায়ের নারী ফুটবলে দ্বিতীয়বার এশিয়ার শীর্ষ আসরে খেলার।

আরআই/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।