শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মূসক প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে তার প্রভাব সরাসরি শিক্ষার্থীদের উপর পড়বে বলে মনে করছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এ মূসক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে দলের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মূসক প্রত্যাহার না হলে এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সোমবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই হুমকি দেন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাইলট বলেন, শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বলা হলেও ছাত্রলীগের সীমাহীন অপকর্মের ফলে তা ধীরে ধীরে হেলে পড়ছে। এরকম একটি সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসমূহে ১০ শতাংশ হারে মূসক আরোপের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যয়নরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর।
তিনি বলেন, উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহের জন্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকেই এ অর্থ আদায় করবে, যার ফলে তাদের বেতন, ভর্তি ও সেমিস্টার ফি অনেক বৃদ্ধি পাবে। দেশে প্রয়োজনের তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। তাই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে মূসক আরোপ হলে শিক্ষার্থীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এমনকি অনেক ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষা জীবন এতে হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি আরা বলেন, ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী স্বৈরতান্ত্রিক শাসনযন্ত্রে পিষ্ট হয়েছে দেশের মানুষ, গণতন্ত্র এবং জাতির মেরুদণ্ড শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের লাগামহীন আধিপত্য, ভর্তিবাণিজ্য, সিটবাণিজ্য, ছিনতাই, অপহরণ, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সংঘর্ষে প্রতিনিয়ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা আহত ও নিহত হওয়ায় এমনিতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আবার নতুন করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে মূসক আরোপ ও জিডিপির তুলনায় কম বরাদ্দ দেয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, কল্পনাবিলাসী ও বাস্তবায়নের অযোগ্য এবারের বাজেটে অনুন্নয়ন খাতগুলোতে ব্যয় অনেক বাড়লেও কমে গেছে শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর বরাদ্দ। প্রস্তাবিত বাজেটে টাকার অঙ্কে হয়তো শিক্ষা খাতের বরাদ্দ বেড়েছে কিন্তু জিডিপির দিক থেকে বিবেচনা করলে বরাদ্দ অনেক কমেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল দেশের ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যেমন বদ্ধপরিকর, ঠিক তেমনই ছাত্রসমাজের স্বার্থের পরিপন্থি যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাই ছাত্রদল দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ মূসক প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।
এমএম/এসকেডি/বিএ/এমএস/এসআরজে