১৮ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল গ্রহণ


প্রকাশিত: ০৪:৩৪ পিএম, ০২ আগস্ট ২০১৫

১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এস আলম স্টিল লিমিটেডসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠান ও দুই ব্যক্তির জমা দেয়া সাতশ চার কোটি ৬৫ লাখ টাকা ফেরত সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার তার ওপর আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র (এসকে) কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিতের আদেশ চলমান থাকবে জানিয়ে আবেদনকারীপক্ষকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সার সংক্ষেপ দাখিল করার জন্য বলেন।

সেনা-সমর্থিত গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে কর ফাঁকি ও অবৈধ উপার্জনসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এককালীন আর্থিক `জরিমানা` করা হয়েছিল। ওই অর্থ ফেরত চেয়ে ২০১০ সালের এপ্রিলে রিট করে এস আলম স্টিল লিমিটেডসহ ওই গ্রুপের সাত প্রতিষ্ঠান এবং দি কনস্যুলেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ড লি. ও বারাউড়া (সিলেট) চা কোম্পানি পৃথক দুটি রিট আবেদন করে।

আদালত রিটের প্রাথমিক শুনানি করে আদালত রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি করে ওই বছরের ২৪ আগস্ট ৯০ দিনের মধ্যে ওই অর্থ ফেরত দিতে নির্দেশ দেন। নথিপত্রে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপের সাত প্রতিষ্ঠানের ৬০ কোটি টাকা এবং অপর দু`টির ২৩৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ফেরতের নির্দেশনা দেয়া হয়। সব মিলে পৃথক ১১টি রিটে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। হাইকের্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার ওপর রোববার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

আজ আদালতের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম। রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, মাহমুদুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসানুল করিম, ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক প্রমুখ।

ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টে টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিল। আমরা বলেছি একবার যখন টাকা জমা দিয়েছে তা রিট করে ফেরত নেয়া যায় না। এই এখতিয়ার আদালতের নেই। আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল করার সুযোগ দিয়েছে। আপিলের সার-সংক্ষেপ ছয় সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করতে বলেছেন আদালত। অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১/১১ পরে জোর করে টাকা নেয়ার অভিযোগ করে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ১১টি রিট আবেদন ছিল। হাইকোর্ট টাকা ফেরত দিতে বলেছিলেন।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জোর করে টাকা নেয়া হয়নি, তারা স্বেচ্ছায় টাকা দিয়েছে। আদালত লিভ টু আপিল করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের তখনকার আয়কর বিবরণীর ফাইল জমা দেয়ার জন্য বলেছেন। সঙ্গে সঙ্গে হাইকোর্টের রায় স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট কোম্পানি লিমিডেটসহ পাঁচ রিট আবেদনকারীর আইনজীবী আহসানুল করিম আবেদনকারীর বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আবেদনকারীরা বলেছেন, ১/১১ জরুরি অবস্থার সময় চাপের মুখে এসব প্রতিষ্ঠান অগ্রিম কর বাবদ বিভিন্ন ব্যাংকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ওই অর্থ জমা দিয়েছিল। পরে গণতান্ত্রিক সরকার এলে অর্থ ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের শুনানি করে হাইকোর্ট অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন, পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনে তা আবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালতে স্থগিত করেন।

এফএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।