জাবির জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের শঙ্কায় উপাচার্যকে বেলা’র চিঠি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের শঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। এতে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় চায়না দুয়ারি জাল নিষিদ্ধকরণের কথা বলা হয়েছে জোরালোভাবে।
রোববার (২০ জুলাই) বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম সই করা চিঠিটি উপাচার্য বরাবর পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘জীববৈচিত্র্য মরণফাঁদে জড়িয়ে’ শীর্ষক সংবাদ বেলার দৃষ্টিগোচর হয় এবং উদ্বেগের সৃষ্টি করে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ও আশেপাশে বিদ্যমান জলাধারগুলোতে চায়না দুয়ারি নামক নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। মূলত সিন্ধুরিয়া, মিরেরটেক, ডেইরি ফার্ম, বিশমাইল লেক ও আশেপাশের অন্যান্য জলাধারগুলোতে এসব জালের ব্যবহার অধিক পরিলক্ষিত হচ্ছে। অতিসূক্ষ্ম ফাঁসের এ জালে আটকে জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংসপ্রপ্ত হচ্ছে।

চিঠিতে আরও লেখা হয়, এ জালে প্রতিনিয়ত সাপ, ব্যাঙ, পোনা মাছসহ নানা ধরনের জলজ প্রাণী ও কীটপতঙ্গ আটকে যাচ্ছে। জাল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে শরীর ছিঁড়ে ধীরে ধীরে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু ঘটছে। শুধু তাই নয়, খাদ্যের জন্য মাছের উপর নির্ভরশীল দেশীয় ও পরিযায়ী পাখি বিশেষ করে মাছরাঙা ও বক আটকে যাচ্ছে এসব জালে। ফলশ্রুতিতে জলজ জীববৈচিত্র্যের খাদ্যশৃঙ্খল ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র।
সংবাদপত্রের বরাতে চিঠিতে বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে থাকা লেকগুলো ইজারা দেওয়া হয়েছে এবং ইজারাগ্রহীতারা এসব জাল ব্যববহার করছেন। ইজারাবর্হিভূত জলাধারগুলোতে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী-কর্মকর্তারা নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করছেন মর্মেও সংবাদে উল্লেখ রয়েছে।
চিঠিতে জানানো হয়, দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ৪.৫ সেন্টিমিটারের চেয়ে ছোট ফাঁসবিশিষ্ট জাল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং আইনত দণ্ডনীয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে ও এর আশপাশে বিদ্যমান জলাধারগুলোর জলজ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ও এদের বাস্তুতন্ত্র ও খাদ্য শৃঙ্খল টিকিয়ে রাখতে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার অনতিবিলম্বে বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে বেলা। একইসঙ্গে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির দাবি জানানো হয়।
সৈকত ইসলাম/এসআর/জিকেএস