‘ন্যায়ের পক্ষে থাকাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব’
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) সাদা দলের (বিএনপিপন্থি) উদ্যোগে ‘জুলাই-২৪ গণঅভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এই দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেকৃবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রাশেদুল ইসলাম
এছাড়াও সাদা দলের নেতা এবং ছাত্র-সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভিন্নমত থাকতেই পারে। কিন্তু জুলাইয়ের ঘটনায় যেসব ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছিল, সেগুলোর সঠিক ও নিরপেক্ষ বিচার হওয়া জরুরি। ন্যায়ের পক্ষে থাকাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কেউ কেউ নিজের পরিবারের ১৫ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন, সেটিও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, অহংকার ও দাম্ভিকতার কারণেই খুনি হাসিনা দলবলসহ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী দীর্ঘ সময় অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়কে একাডেমিকভাবে পুনর্গঠনের মাধ্যমে এগিয়ে নেওয়া। এ লক্ষ্যে আমরা সফল হয়েছি। বর্তমানে ৩০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে।
ভর্তির ক্ষেত্রে পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বাতিল করে যুক্তিসংগত ও ন্যায্য নিয়ম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিপীড়নের পক্ষে থাকা ১২ জন শিক্ষক ও ১০ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্তসহ মোট ৮৮ জনকে বিভিন্ন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এই তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে যতদিন না দোষীদের চূড়ান্ত শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ইউট্যাব সভাপতি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে আওয়ামী লীগ মানুষের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। তাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে জনবান্ধব কার্যক্রমের কোনো উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত নেই। দলে দলে ভাগ হয়ে তারা শুধু ব্যক্তি স্বার্থকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম চালিয়েছে, যার ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সেই ফ্যাসিবাদ থেকে দেশকে মুক্ত করেছে ছাত্র ও জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধ। তবে এখনো কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি। এজন্য জরুরি একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। কারণ, একমাত্র জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই পারে দেশকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে। আমাদের ইস্পাতসম ঐক্যের মাধ্যমেই একটি সুন্দর, ন্যায়ভিত্তিক ও প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
এছাড়াও ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা গণ অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন ছাড়াও যারা শেকৃবি শিক্ষার্থীদের নামে মামলা দিয়েছিলেন তাদের বিচারের দাবি জানান।
সাইদ আহম্মদ/এমআরএম/এএসএম