জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ না করেই চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রায়হান শরীফ ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মন্ময় জাফরের যৌথ স্বাক্ষরে এ সময়সূচি প্রকাশ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল ৭৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হওয়ার প্রায় আট মাস পার হওয়ার পরও ফলাফল প্রকাশ করেনি বিভাগটি। তবে ৭ সেপ্টেম্বরকে শুরুর তারিখ ধরে চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে বিভাগটি।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, ফলাফল ছাড়াই শেষ বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে, যা তাদের জন্য মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ যদি তৃতীয় বর্ষের কোনো কোর্সে উত্তীর্ণ না হয়ে থাকেন, তাহলে তার পক্ষে একসঙ্গে তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া কেউ মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে চাইলে সেখানেও জটিলতা তৈরি হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ছালেহ আহাম্মদ খান বলেন, বিভাগ চাইলে সময়সূচি দিতে পারে, তবে তৃতীয় বর্ষের রেজাল্ট প্রকাশের আগেই চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করার নিয়ম নেই।
তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একাধিকবার পরীক্ষকদের অনুরোধ করলেও তারা সময়মতো খাতা মূল্যায়ন করেননি। এমনকি একজন পরীক্ষক, যিনি কমিটির সদস্যও, তিনিও খাতা জমা দিয়েছেন সবার শেষে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এক ব্যাচের ফলাফল বিলম্ব হলে তা আরও অন্তত তিনটি ব্যাচকে প্রভাবিত করে। ফলাফল বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আমার কিছুই বলার নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, এটা পুরোপুরি বিভাগের ব্যর্থতা। যদি কেউ তৃতীয় বর্ষে কোনো কোর্সে ফেল করে, তবে তাকে সেই কোর্সে পুনরায় পরীক্ষা দিতে হবে। এখন মাত্র এক মাস হাতে রেখে একই সঙ্গে তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের প্রস্তুতি নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এছাড়া ফলাফলের উপর মানসিক প্রস্তুতিও নির্ভর করে। দেখা যায় এখনো ফলাফল না দিয়ে পরীক্ষার কয়েকদিন আগে ফলাফল প্রকাশ করা হলো, তখন যাদের খারাপ হবে তারা পরবর্তী পরীক্ষার প্রস্তুতিও ঠিকভাবে নিতে পারবে না।
এ বিষয়ে জানতে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রায়হান শরীফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ফোনে পাওয়া যায়নি।
সৈকত ইসলাম/এমএন/জেআইএম