ঢাবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে অপমানের অভিযোগ, বিক্ষোভ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে অপর এক নারী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ‘কুৎসা’ রটানোর অভিযোগে ক্লাসে সবার সামনে ‘অপমান’ করার অভিযোগ উঠেছে বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে। এদিকে অপমানের শিকার হয়ে শিক্ষার্থী ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেসবুকে আত্মহত্যার ঘোষণা দিয়ে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাত ৮টার দিকে টিএসসি এলাকা থেকে এ শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর তার খোঁজ নিলে কোথায়ও পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন তারা।
অপমানের শিকার শিক্ষার্থী নাম ইসহাক ধ্রুব। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। সে হলে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তার বন্ধুরা জানায়, ধ্রুব খুব ভালো ছেলে। সুন্দর ছবি তোলার সুবাদে তার অনেক রাজনৈতিক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। সে হল ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক পদ পেয়েছিল। কয়েকদিন আগে বিভাগের একটি ট্যুরে সুন্দরবন গিয়েছিল তার সহপাঠীরা। সেখানে এক মেয়ে বন্ধুর কিছু কার্যক্রম নিয়ে ‘কুৎসা’ রটানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। অথচ ধ্রুব ট্যুরেই যায়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত সব শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাকে সন্দেহ করেন অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান। সন্দেহ করে তাকে খারাপ, বখাটে ছেলে বলে আখ্যা দেন। ছাত্রলীগের পোস্ট থাকায় তাকে নারী নিপীড়ক খারাপ ছেলেদের দলের অন্তর্ভুক্ত বলে অপমান করেন। পরে ধ্রুব ক্লাসে কান্না করলেও অধ্যাপক তাকে ছাড় দেননি। পরে রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিখোঁজ হন তিনি।
রাত পৌনে দুইটার দিকে আহতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল থেকে তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সহকারী প্রক্টর ড. মোহাম্মদ শাহীন খান।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দিন খান জাগো নিউজকে বলেন, ক্লাসে একটি বিষয়ে আমরা তার সঙ্গে কথা বলছিলাম। তার কাছে একটা বিষয়ের জবাব জানতে চেয়েছিলাম। ছাত্রলীগ করার কারণে তাকে অপমান করা হয়নি। এসব অভিযোগের সত্যতা নেই। আমি ওর সঙ্গে সন্ধ্যায় চটপটি খেয়েছি। এখন তার খোঁজখবর নিচ্ছি। তার মায়ের সঙ্গে কথা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থী নির্যাতন, নিপীড়ন, মানসিক শাস্তি দেওয়ার জন্য শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
আল-সাদী ভূঁইয়া/এমএএইচ/