বর্ষা হলেই রাস্তায় হাঁটু পানি, রোদে ধুলায় অন্ধকার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ১০:১৯ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের নওয়াবেকী বাজার থেকে গাঁতিদার সেতু পর্যন্ত সড়কটি এখন জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ অসম্পূর্ণ ও ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় বর্ষায় হাঁটুসমান পানি জমে যায়, আর রোদে ধুলাবালি উড়ে চারপাশে অন্ধকার হয়ে ওঠে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত, ইটের খোয়া ছড়িয়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জমে যায় হাঁটু পানি, আবার রোদ হলেই ধুলায় পথচারী ও স্থানীয়দের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘আমরা প্রায় দুই থেকে তিন বছর ধরে এ ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ঘরে বসবাসও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ধুলার কারণে নাক-মুখে সমস্যা হচ্ছে, শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। মনে হচ্ছে এলাকা ছেড়ে না গেলে বাঁচা যাবে না।’

পথচারী ও শ্রমজীবী মানুষও চরম ভোগান্তির শিকার। ভ্যান ও মোটরযান চালকরা বলেন, ‘রাস্তার ওপর বড় বড় ইটের খোঁয়া থাকায় গাড়ি নষ্ট হচ্ছে। প্রতিদিনই গাড়ি মেরামত করতে হচ্ছে।’

স্থানীয় কৃষক মো. আব্দুল খালেক বলেন, ‘এ রাস্তা দিয়ে বাজারে ধান-চাল নিয়ে যাওয়া যায় না। ভ্যান উল্টে যায়, ট্রলি আটকে যায়। দুই বছর ধরে কষ্ট করছি, কেউ সমাধান করছে না।’

স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করেও ধুলাবালি আটকানো যায় না। ঘরের ভেতরে রান্না করা দায় হয়ে পড়েছে। ছোট বাচ্চাদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে।’

ভ্যানচালক আজিজুল বলেন, ‘রাস্তায় বড় বড় খোয়া পড়ে আছে। ভ্যানের চাকা নষ্ট হয়, যাত্রী নিতে পারি না। দিনে এক-দুই ট্রিপের বেশি কাজ হয় না। সংসার চালানো কঠিন হয়ে গেছে।’

পথচারি সেলিম মল্লিক বলেন, ‘একটু বৃষ্টি হলে পানি জমে হাঁটু পর্যন্ত ওঠে। তখন হেঁটে চলা যায় না। আবার রোদ হলে ধুলার ঝড় ওঠে। এই রাস্তায় চলাচল মানেই ভোগান্তি।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান বলেন, ‘দোকান চালাতে পারি না। গ্রাহক আসতে চায় না এ রাস্তা দিয়ে। ব্যবসা একেবারে মন্দা হয়ে গেছে। আমরা বারবার অভিযোগ করেছি, কিন্তু কাজের অগ্রগতি নেই।’

আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু জাগো নিউজকে বলেন, ‘বারবার ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার জন্য বলেছি। এমনকি উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে বিষয়টি তুলেছি। তবুও কাজ হচ্ছে না। এতে জনগণ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার নুরুল হক মোল্লার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনি খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাস্তার কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন না হয়, তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণের ভোগান্তি দূর করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

আহসানুর রহমান রাজীব/এএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।