রোহানের চিকিৎসায় প্রয়োজন ৩০ লাখ টাকা, দিশেহারা ভ্যানচালক বাবা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নাটোর
প্রকাশিত: ১০:০০ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২৫
রোহান মাহমুদ

নাটোরের বাগাতিপাড়ার বাসিন্দা শিশু রোহান মাহমুদ (৭)। পড়াশোনা করছে পৌর প্রি ক্যাডেট স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে। ক্লাসরুমের পাঠ আর মাঠে খেলাধুলা এই ছিল তার দৈনন্দিন জীবনের অংশ। কিন্তু হঠাৎ এক রোগে আক্রান্ত হয়ে সেই স্বাভাবিক জীবনের রঙ ফিকে হয়ে গেছে তার। লড়ছে প্রাণঘাতী রোগ অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ার বিরুদ্ধে লড়ছে রোহান।

জানা গেছে, রোহান বাগাতিপাড়া পৌরসভার পেড়াবাড়িয়া মহল্লার ভ্যানচালক রবিউল ইসলাম ও গৃহিণী রুনি খাতুন দম্পতির ছেলে। সংসারের অভাব-অনটনের ভেতরেই চলছিল তাদের দিন। কিন্তু ছেলের অসুস্থতা এই পরিবারটিকে যেন একেবারেই কোণঠাসা করে ফেলেছে।

রোহানের মা রুনি খাতুন বলেন, কুরবানির ঈদের পর হঠাৎ করে ছেলের শরীরে কালচে দাগ দেখা দেয়। জ্বর আর অসুস্থতায় প্রথমে নাটোর, পরে রাজশাহী হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। রক্তসহ বমি করা, পায়খানার সময় রক্ত পড়া-সব মিলিয়ে দফায় দফায় হাসপাতালে নিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ঢাকার শিশু হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসকেরা জানান, রোহান অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়ার আক্রান্ত।

রোহানের বাবা রবিউল ইসলাম ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। চোখে মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে বলেন, ডাক্তাররা জানিয়েছেন, রোহানকে বাঁচাতে হলে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। তাতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা লাগবে। আর বিকল্প চিকিৎসায় বিশেষ ইনজেকশন দিতে হবে যার প্রতিটির দাম ২ থেকে ৩ লাখ টাকা। আমি তো ভ্যানচালক, প্রতিদিনের রোজগারেই সংসার চালাতে কষ্ট হয়। সন্তানের চিকিৎসার জন্য আমি সবার কাছে সাহায্য চাইছি।

রোহানের চাচা মুনতাজ আহমেদ জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ভাতিজার শরীর খারাপ হলে রক্ত দিতে হয়েছে। রাজশাহীতে ভর্তি করার সময় ২ ব্যাগ রক্ত দিতে অনেক টাকা লেগেছে। বারবার রক্ত লাগবে। এই খরচ বহন করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব।

রোহানের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সে আমাদের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। হঠাৎ তার অসুস্থতার খবরে আমরা শোকাহত। যতটুকু পারছি সহায়তা করছি। তবে সমাজের সবাই এগিয়ে এলে হয়তো সে সুস্থ হয়ে আবার পড়াশোনা করতে পারবে।

রোহানের প্রতিবেশী ও সাবেক কমিশনার কামরুজ্জামান বাবু বলেন, পরিবারটি একা এত বড় ব্যয় বহন করতে পারবে না। এলাকার বিত্তবানরা এগিয়ে আসুক। সরকারের পক্ষ থেকেও যদি চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে হয়তো এই শিশু নতুন জীবন পেত।”

মাত্র সাত বছরের কোমল প্রাণ রোহান নতুন করে জীবন ফিরে পেতে চায়। খেলাধুলা, পড়াশোনা আর স্বপ্নের ভবিষ্যৎ আবার ফিরে পেতে চায় সে। তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে হতাশায় ডুবে গেছে পরিবার। তাই দেশবাসীর সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে পরিবার ও এলাকাবাসী।

রেজাউল করিম রেজা/এনএইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।