গ্রাহকদের সোনা আত্মসাৎ করতে দোকানমালিকের ডাকাতির নাটক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:৫৭ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
সোনার দোকানে ডাকাতির নাটক

মানিকগঞ্জ শহরের অভি অলংকার নামে সোনার দোকানমালিক শুভ দাস। গ্রাহকদের সোনা আত্মসাৎ করতে নিজেই ডাকাতির নাটক সাজান তিনি। সাজানো ডাকাতির জন্য ৫ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তিও করেন কয়েকজনের সঙ্গে। অবশেষে পুলিশের জালে ফেঁসে গেলেন তিনি। সাজানো এই ডাকাতির ঘটনায় শুভসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

‎সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় মানিকগঞ্জ সদর থানায় সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াসমিন খাতুন এসব তথ্য জানান।

দোকান মালিক শুভ দাস ছাড়াও ‎গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আমানত হোসেন রানা (২৭), সোহান মিয়া (২১), মো. শরীফ খান (২২), মো. সবুজ মিয়া (২৭)।

মোছা. ইয়াসমিন খাতুন জানান, জেলা শহরের পশ্চিম দাশড়া এলাকার স্বর্ণাকারপট্টির পান্ডব ভবনের নিচতলায় অবস্থিত অভি অলংকার সোনার দোকান। গত ৫ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১২টা ১৫ মিনিটে সোনার এই দোকানে দুইজন দুষ্কৃতিকারী প্রবেশ করেন। তারা দোকানের মালিক শুভ দাসকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে লকারে থাকা আনুমানিক ২০ থেকে ২২ ভরি স্বর্ণালংকার (মূল্য প্রায় ৩৬ লাখ টাকা) লুট করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন দোকান মালিক। এ সময় প্রতিরোধ করতে গেলে শুভ দাসের পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয় বলেও জানানো হয়।

এদিকে ‎ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ও সদর থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ নির্দেশনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মানিকগঞ্জ সদর ও শিবালয় থানার পৃথক এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ সোনার দোকান মালিক শুভ দাসসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রাহকদের সোনা আত্মসাৎ করতে দোকানমালিকের ডাকাতির নাটক

পুলিশ সুপার জানান, ‎এ ঘটনায় আরও একজন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া এ ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, একটি ধারালো চাকু, ব্যবহৃত পোশাক, দোকানের স্টিলের বক্স ও মোট ৩৯ ভরি ৭ আনা ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।

‎পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দোকান মালিক শুভ দাস নিজেই গ্রাহকের স্বর্ণ আত্মসাতের উদ্দেশে এই ডাকাতির নাটক সাজান। এরপর তিনি পরিচিত মোটরসাইকেল মেকানিক আমানত হোসেন রানার সঙ্গে যোগসাজশ করে পুরো পরিকল্পনা করেন। পরে রানার সহযোগিতায় শরীফ খান ও অপর একজনকে শহরে এনে একটি হোটেলে রাখেন।

‎পরিকল্পনা অনুযায়ী, শুভ দাস সাজানো ডাকাতির জন্য ৫ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তি করেন এবং গ্রেফতারকৃতদের থাকা-খাওয়ার খরচ বাবদ ৪৫ হাজার টাকা দেন। এরপর ৫ অক্টোবর রাতে দোকানে নাটকটি বাস্তবায়ন করা হয়। এসময় শুভ দাস নিজেই ছুরিকাঘাতের ভান করেন, যাতে ঘটনাটি বাস্তব মনে হয়।

‎পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন আরও জানান, শুভ দাসের মূল উদ্দেশ ছিল গ্রাহকের জমা রাখা স্বর্ণ আত্মসাৎ করা। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

‎মো. সজল আলী/এনএইচআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।