ফুল যতই ফুটছে, কান্না ততই বাড়ছে


প্রকাশিত: ০১:১৯ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ফুল যতই ফুটছে, হাবিজার রহমানের কান্না ততই বাড়ছে। চলমান অবরোধ-হরতালে দুই বিঘা জমির ফুল সঠিক সময়ে বাজারে নিতে না পারায় অনেকটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই ফুল ব্যবসায়ী।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তালুকবাজিত গ্রামের দিনমজুর আবুল হোসেনের ছেলে হাবিজার রহমান ফুল চাষ করে আসছেন প্রায় পাঁচ বছর ধরে। নিজের দুই বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করছেন তিনি। এই ফুল বিক্রির টাকা দিয়েই চলে বাবা, ছোট ভাই, স্ত্রী, দুই মেয়েসহ ছয় সদস্যের পরিবার।

হাবিজার রহমানের চাষ করা ফুলের মধ্যে রয়েছে, গোলাপ, সূর্যমূখী, রজনীগন্ধা, ডালিয়া, ঘাস ফুল, গাঁদা, জারবেরা (ইন্ডিয়া)।

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে হাবিজার রহমান ফুল উৎপাদন শুরু করে মাত্র পনেরো শতাংশ জমিতে।

হাবিজার রহমান জানান, দুই বিঘা জমিতে তিনি ফুল চাষ করেন। আর এ ফুল ছোট ভাই মিন্টু মিয়া রংপুর শহরে নিজস্ব ফুলের দোকানে বিক্রি করেন। কিন্তু চলমান অবরোধ-হরতালে সঠিক সময়ে ফুল রংপুর পৌঁছাতে না পেরে অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন এই ফুল ব্যবসায়ী।

অনেক সময় বাগান থেকে ফুল তুলে তা বাজারে পাঠাতে না পারায় ফুল বাগানেই শুকিয়ে যায়। এতে করে তিনি আর্থিকভাবে অনেকটা ক্ষতির সম্মুখিত হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, দুই বিঘা জমিতে ফুল চাষে মাসিক ১২-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর খরচ বাদে প্রতিমাসে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো আয় হয়। বাগানের সকল প্রকার কাজে স্ত্রী সুফিয়া বেগমসহ পরিবারের সবাই তাকে সাহায্য করে। এতে করে বাগানের কাজের জন্য অন্য কোনো শ্রমিক প্রয়োজন হয় না তার।

একই গ্রামের নুরুল হক জানালেন, হাবিজার রহমান কিছু দিন আগে অনেক কষ্টে দিনাতিপান করেছেন। কখনও শ্রমিকের কাজ, কখনও বা ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু, ফুল চাষ শুরু করার পর থেকে তার ভাগ্যের চাকা খুলে গেছে। এখন তিনি একজন সফল ফুলচাষী ও স্বাবলম্বী ব্যক্তি।

এছাড়াও ফুলের বাগানের চারপাশে কয়েকশ লেবুর গাছ রয়েছে তার। এ থেকেও তার বাৎসরিক অনেকটা আয় হয়।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার সত্যেন কুমার জানান, হাবিজার রহমান ফুল চাষ শুরু করার পর থেকেই কৃষি অফিসের পরামর্শ গ্রহণ করতেন। হাবিজারকে দেখে ওই এলাকার অনেকেই এখন ফুল চাষের দিকে ঝুকে পড়েছেন বলে জানান তিনি।

এমএএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।