সিরাজগঞ্জে দুই দিনে ২১ জন অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:৪৩ পিএম, ০৭ জুন ২০১৭

অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে গত দুই দিনে ৪ শিশু ও মহিলাসহ ২১ ব্যক্তি অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি চিকিৎসক দল ওই গ্রামে রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

এদিকে কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে কৃষকদের গরুগুলোকে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে ইনজেকশন দেয়া এবং এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করতে পুরো এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে ১৫ জন অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত করা হয়। বুধবার আরও ছয়জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে অসুস্থ গরুর মালিক সেরাজুল ইসলাম আরিফকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

আক্রান্ত রোগীরা হলেন মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫), কামরুল ইসলাম (১৪), কালিয়াকৈড় গ্রামের শাহ আলম (৪০), আকরাম হোসেন (৩০), সেরাজুল ইসলাম আরিফ (৩৫), মাসুদ রানা (২৭), আব্দুস সামাদ (৫০), লিমা খাতুন (৩), ফাতিমা বেগম (৭০), রাশিদা খাতুন (৩১), আব্দুল হান্নান (৪০), জাহানারা খাতুন (৩০), বাদশা মিয়া (১৪), সেতু (১০), সিয়াম (১০), আমনত আলী (৪০), বুুলবুলি খাতুন (২৫), লিপি খাতুন (৩০), রাবেয়া (৫), হাবিব (৩) ও আব্দুল মান্নান (৫০)।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়রা জানায়, পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলা থেকে ২৫ মে মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫) ও কামরুল ইসলাম (১৪) অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে বাড়িতে আসার ১ সপ্তাহ পর অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়।

গত ২৯ মে কালিয়াকৈড় গ্রামের সেরাজুল ইসলাম আরিফ তার একটি অসুস্থ ষাঁড় গরু জবাই করে কমমূল্যে গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিক্রি করে। এই মাংস জবাই, কাটা, বণ্টন ও যারা খেয়েছেন তাদের সকল পরিবারের লোকজনই পর্যায়ক্রমে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত লোকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাল এক ধরনের ফোসকা ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে জ্বর ও ব্যথা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরুল ইসলাম জানান, তার নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল গত দুই দিনে মোহনপুর ও কালিয়াকৈড় গ্রামে মোট ২১ ব্যক্তিকে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, যারা অসুস্থ গরুর মাংস খেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে বিশেষ করে কালিয়াকৈড় গ্রামে অ্যানথ্রাক্স রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন খান জানান, অসুস্থ গরুর মালিক কালিয়াকৈড়ের সেরাজুল ইসলামকে উল্লাপাড়ায় মঙ্গলবার বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এএম/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।