স্বামীর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে গৃহবধূর হিল্লা বিয়ে!
দেশের প্রচলিত নিয়মে হিল্লা বিয়ের ব্যবস্থা না থাকলেও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বড়ভৈরব গ্রামে রুমা খাতুন (২০) নামের এক গৃহবধূর হিল্লা বিয়ে দেয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে ভৈরব গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ আলীর স্ত্রী রুমা খাতুনের সঙ্গে এরশাদের ছোট ভাই ইউসুফ আলীর হিল্লা বিয়ে দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হিল্লা বিয়ের মেয়াদ তিন মাস ১৩ দিন। হিল্লা বিয়ের ফতোয়া দিয়ে এই বিয়ে পড়ান ভৈরব গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক হাজি শাহ আলম।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ৮ মাস আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে এরশাদ তার স্ত্রী রুমাকে তালাক দেন। তাদের একটি ছেলে রয়েছে। ছেলের সুবাদে এরশাদ ও রুমা আবার বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।
গত সপ্তাহে তারা সিরাজগঞ্জ আদালতে নতুন করে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। এ বিয়েটি মেনে নিতে পারেননি ভৈরব গ্রামের মুসল্লিরা। হাজি শাহ আলম গ্রামে ফতোয়া দেন রুমাকে হিল্লা বিয়ে দিয়ে পরে আবার তার পূর্বের স্বামীর সঙ্গে বিয়ে দেয়া হবে। তিনি গ্রামের বিরু প্রামাণিক, মজিবর প্রামাণিক, নুর ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও আব্দুর রহমানের সহযোগিতায় রুমাকে বুধবার রাতে হিল্লা বিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে গৃহবধূ রুমা খাতুনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, গ্রামের মাতব্বর ও হুজুরের চাপের মুখে আমি হিল্লা বিয়েতে বসতে বাধ্য হয়েছি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় দুর্গানগর ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের আইন অমান্য করে কতিপয় ফতোয়াবাজ এই হিল্লা বিয়ে দিয়েছেন। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। ফতোয়াবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষক শাহ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী রুমাকে হিল্লা বিয়ে দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট মেয়াদের পরে তার পূর্বের স্বামীর সঙ্গে বিয়ে পড়ানো হবে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, দেশের প্রচলিত আইনে হিল্লা বিয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই। যারা এসব বলছেন তারা অন্ধকার যুগে রয়েছেন।
ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এএম/জেআইএম