কবিরাজের ভুয়া চিকিৎসায় চোখ হারালো দেড় বছরের শিশু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ১১:০৩ এএম, ০৩ জুন ২০১৮

যশোরের মণিরামপুরে দেড় বছরের শিশুকে ঝাঁড়-ফুঁকের নামে অন্ধ করে দিয়েছেন এক ভুয়া কবিরাজ। জিন তাড়ানোর নামে ঝাঁড়-ফুঁক দেয়াসহ চোখের মধ্যে বিষাক্ত গাছের রস দিলে মাছুম বিল্লাহ নামের ওই শিশু দৃষ্টিশক্তি হারায়।

এ ঘটনার পর শুক্রবার বাতে শিশুর স্বজনরা কবিরাজ মুনসুর আলীকে ধরে বাড়িতে আটক রেখে পুলিশে সোপর্দ করার প্রস্তুতি নেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে একটি চক্র শিশুর চোখ ভালো করতে সমুদয় খরচ বহন করার টোপ দিয়ে ওই কবিরাজের পরিবারসহ তাকে মুক্ত করে নিয়ে যায়। পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার শিকার শিশু মাছুম বিল্লাহ মণিরামপুর পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের আকরাম মোড় নামক স্থানের মৃত শরিফুল ইসলাম ছেলে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, মাছুমের বাবা শরিফুলের মৃত্যুর পর শিশুকে হতদরিদ্র নানী মরিয়ম বেগম ও মা সোনিয়া খাতুন দেখভাল করে আসছে। মাস খানেক আগে শিশুটি জ্বরে আক্রান্ত হয়। জ্বর হয়েছে এমন ভাবনায় পার্শ্ববর্তী কাশিপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ গোলদারের ছেলে কথিত কবিরাজ মুনসুর আলীকে খবর দেয়া হয়। কবিরাজ শিশুটিকে দেখে জানায়, নিজ এলাকায় তার চিকিৎসা করা যাবে না। তাকে (শিশু) নিতে হবে তার দাদার বাড়ি উপজেলার জালালপুর গ্রামে।

শিশুর নানী মরিয়ম জানান, কবিরাজের কথামতে জালালপুর গ্রামে নেয়ার হয় মাছুমকে। ‘শিশুর উপর জিনের আছর লেগেছে’ এমন কথা বলে শিশুর শরীরে ঝাঁড়-ফুঁক দেয়াসহ চোখের মধ্যে ওষুধ নামের তরল রস দেয়া হয়। এর কয়েক দিন পর থেকে মাছুম দু’চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না বলে জানান নানী মরিয়ম।

এরপর থেকে ওই কবিরাজকে তারা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও পাননি। হঠাৎ শুক্রবার রাতে পৌর শহরের রাজগঞ্জ মোড়ের পাশে ট্রেকার স্ট্যান্ড থেকে কবিরাজ মুনসুরকে পাকড়াও করে বাড়িতে নিয়ে আটকে পুলিশে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়। খবর পেয়ে আটক কবিরাজের পরিবারসহ একটি চক্র আকরাম মোড়ে আসে। এ সময় শিশুর দু’চোখ ভালো করতে যত টাকা লাগবে তা বহন করার মৌখিক আশ্বাস দিয়ে কবিরাজকে মুক্ত করে নিয়ে যাওয়া হয়।

মিলন রহমান/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।