বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করা হচ্ছে আইসোলেশন ইউনিট
বগুড়ায় করোনাভাইরাসের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা শহরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের পুরোটাই আইসোলেশন ইউনিট ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সব রোগীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।
সোমবার (২৩ মার্চ) বগুড়ার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহম্মেদের সভাপতিত্বে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রস্তুতি কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ সর্দি-কাশি, জ্বর ও মাথাব্যথার চিকিৎসার বদলে টেলি মেডিসিন বা মুঠোফোনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানতে চাইলে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. শফিকুল আমিন কাজল জানান, এখনও এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা তারা হাতে পাননি। যে কারণে হাসপাতালের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চলছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জরুরি পরিস্থিতিতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা সমন্বিতভাবে ২৫০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেবেন। তারা পালা করে ২৪ ঘণ্টা আইসোলেশন ইউনিটে দায়িত্ব পালনের পর ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।
সভায় বলা হয়, নানা কারণে উত্তরাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ জেলা। জনসমাগমও বেশি হওয়ার কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকিও এখানে বেশি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। বিদেশ ফেরত ব্যক্তিরা যাতে কোনোভাবেই কোয়ারেন্টাইন ভঙ্গ না করেন সে জন্য প্রশাসনকে সর্বোচ্চ নজরদারি করতে হবে। সবাইকে দায়িত্বশীল ও সচেতন হতে হবে। বিনা প্রয়োজনে আগামী দুই সপ্তাহ জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রচারপত্র বিলি, স্যানিটাইজার, মাস্ক বিতরণের নামে রাজনৈতিক লোক দেখানো কর্মসূচি বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, দলবলে প্রচারপত্র বিলিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। তাছাড়া কাগজের তৈরি প্রচারপত্রের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এসব কর্মসূচির বদলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালানো যেতে পারে।
সভায় বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, শাজাহানপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ১০০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু শাজাহানপুরে নির্মাণ কাজ চলছে। এখন ভরসা মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ টি এম নুরুজ্জামান বলেন, মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের চারদিকে আবাসিক ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। রয়েছে সরকারি ওষুধের কারখানা। এখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেয়া ঝুঁকিপূর্ণ। আবার হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটও রয়েছে। নেই আইসিইউ সুবিধা।
আরএআর/এমএস