ঋণের দায় এড়াতে নিজেকে মৃত দেখিয়ে নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জামালপুর
প্রকাশিত: ০২:৩৬ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২১

ঋণখেলাপীর দায় এড়াতে নিজেকে মৃত দেখিয়েছেন নৌকার প্রার্থী। প্রতীক বরাদ্দের আগেই এলাকায় নৌকায় ভোট কামনা করে চালাচ্ছেন প্রচারণাও। জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারীতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর মাদারগঞ্জে পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। গুনারীতলা ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে নিজেকে মৃত দেখানোর তথ্য গোপন করায় আবু শোয়েব নামে এক ভোটার জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

Jamalpur-3

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মোসলেমাবাদ গ্রামের মৃত আফছার আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মেসার্স ফাতেমা আফসার এগ্রো কমপ্লেক্স লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্যুইটি অ্যান্ড অন্ট্র্যাপ্র্যানারশীপ ফান্ড (ইইএফ) ইউনিট-ইইএফ (ব্যবস্থাপনায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ) এর সহায়তায় ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল ৩০ লাখ, একই বছরের ১৬ অক্টোবর ৫১ লাখ ও ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ২১ লাখ ২১ হাজারসহ সর্বমোট ১ কোটি ২ লাখ ২১ হাজার টাকা ঋণ নেন। কিন্তু তিনি নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ না করায় খেলাপী হন।

ঋণ খেলাপী ও ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় মোস্তাফিজুরসহ ৫ জনের নামে ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা হয়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি হয়।

কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি মামলা ও ঋণ থেকে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় তিনি মারা গেছেন মর্মে আদালতে মৃত্যুসনদ দেন। ২০২০ সালের ৩ মার্চ আদালতকে অবহিত করা হয় মোস্তাফিজুর রহমান ও তার বাবা আফছার আলী মিয়া মারা গেছেন। আফছার আলীর মৃত্যুর খবর সঠিক থাকলেও তার ছেলে মোস্তাফিজুরের মৃত্যুর খবরটি মিথ্যা।

Jamalpur-3

ঋণ খেলাপী ও মামলার তথ্য গোপন করে গুনারীতলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। গত ২৯ নভেম্বর যাচাই বাছাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন না করায় তিনি বৈধ প্রার্থী ঘোষিত হন। তথ্য গোপন করে তিনি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৪(জ) উপধারা লঙ্ঘন করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জাগো নিউজকে বলেন, তিনি উল্লেখিত নামের কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনোদিন জড়িতই ছিলেন না এবং তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি।

এ ব্যাপারে জামালপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বাছাই করার পর একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি শুনানি করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাসিম উদ্দিন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।