ময়মনসিংহের বাজারে বেড়েছে সবকিছুর দাম
ময়মনসিংহে ঊর্ধ্বমুখি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। সয়াবিন তেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাছ, মাংস, সবজি ও ডিমের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। তাদের অভিযোগ বাজার তদারকি করার যেন কেউ নেই।
সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব প্রকার সবজি, খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম। একইসঙ্গে বেড়েছে গরু, খাসি ও ডিমের দাম।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহ্যবাহী শম্ভুগঞ্জ বাজারে ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

শম্ভুগঞ্জ মাংস মহালের মাংস বিক্রেতা সুলতাম মিয়া বলেন, গরুর মাংসের দাম সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা বেড়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে খাসির মাংসের দাম।
দাম বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে গরু ও খাসির আমদানি কম। তাছাড়া এখন গরু ও খাসিকে হাইব্রিড খাওয়ানোর কারণ দেখতে বড় দেখায়। কেনার পর ওজনের সঙ্গে দামের মেলে না। যে কারণে পরে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। হাইব্রিড খাওয়ানোর কারণে মানুষেরও রোগবালাই বাড়ছে। এসব তদারকি করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, গরুর মাংস ৬২০ টাকা ও খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে দাম বেড়েছে মুরগি ও হাঁসের ডিমের। দেশি হাঁস ও মুরগির ডিম ৬০, ফার্মের মুরগির ডিম ৩৫ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা ভ্যানচালক জহিরুল মিয়া বলেন, গরিবের খবর কেউ নেয় না। আগে ২০ টাকা বা ৩০ টাকা দিয়ে তেল কিনতে পারতাম। এখন এক কেজির নিচে কেউ বিক্রি করে না। এক কেজি তেল কিনতে গেলেই অর্ধেক দিনের রোজগার শেষ। সবজির বাজারেতো আগুন লাগছে।
শম্ভুগঞ্জ মধ্যবাজারের নুপুর দাস বলেন, সরকার বাড়ানোর পর আমরাও সয়াবিন তেল বেশি দামেই বিক্রি করছি।
তিনি বলেন, বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭০, পাম ও কোয়ালিটি ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, খোলা আটা ৩৫, প্যাকেট ৪০, ছোলা বুট ৭৫, খেসারী ৮০, মটর ১২০, মুগডাল ১০ টাকা বেড়ে ১৪০, ভাঙা মাসকলাই ১৩০, মাসকলাই ৯০, বুটের ডাল ৮০, অ্যাংকার ৫০, দেশি মসুর ১২০, ফুটবল মসুর ১০০ ও চিনি ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

একই বাজারের সবজি বিক্রেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, সবজির মৌসুম শেষের দিকে থাকায় আমদানি কম। তাই সব প্রকার সবজির দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, কাঁচামরিচ ৪০, করলা ৯০ টাকা, ফুলকপি ৫০, পাতা কপি ৪০, টমেটো ৩০, বেগুন ৬০, সিম ৫০, মিস্টি কুমড়া ৪০, মটরশুটি ৮০, গাজর ৪০, কাঁচকলা ২৫, মুলা ৩০, ডাটা ২০ টাকা হালি, লেবু ২০ হালি, শশা ৪০, পেঁয়াজ পাতা ৪০, কুমড়া ৬০, বরবটি ১৬০, লতা ১০০, পুলতা ৬০, লাউ ৬০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিপুল মিয়া বলেন, গরুর মাংস কিনতে গিয়ে দেখি কেজি ৬২০ থেকে ৬৫০ টাকা। তাই গরুর মাংস কেনা হয়নি। ১৫০ টাকা কেজির দেড় কেজি ব্রয়লার মুরগি কিনেছি। তাছাড়া একটা লাউ কিনেছি ৭০ টাকা দিয়ে। আর কিছু কেনার সামর্থ্য নেই।
মাছ মহালের মাছ বিক্রেতা হারুন মিয়া বলেন, সব প্রকার মাছ কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।

তিনি বলেন, পাঙ্গাস ১৪০, তেলাপিয়া ১৮০, টেংরা ৩২০, চান্দা মাছ ৩০০, পাবদা ৪২০, বড় রুই ৩৫০, শিং মাছ ৫০০, শোল মাছ ৫০০ থেকে ৭০০, দেশি পুটি ১২০, সিলভার কার্প ২৬০, রাজপুটি ২৫০, কারপিও ২২০, সুলুঙ্গি মাছ ২৮০, ব্লাড কার্প ৪০০, মৃগেল মাছ ২০০, বাউশ মাছ ২২০, মলা মাছ ৬০০, কাতল মাছ ২৫০, টাকি মাছ ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৫০, লেয়ার মুরগি ২৫০, সোনালী ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
একই বাজারের রবিন মিয়া বলেন, বড় আলু ১৫, ছোট আলু ২০, পেঁয়াজ ৩২ ও আদা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এফএ/এমএস