ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বঙ্গবন্ধু চত্বর হবে দেখার মতো

সায়ীদ আলমগীর
সায়ীদ আলমগীর সায়ীদ আলমগীর কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০১:৪৩ পিএম, ০৩ মার্চ ২০২২

কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠার দু’যুগে এসে অত্যাধুনিক রূপ পাচ্ছে। চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কিনার থেকে পার্কে প্রবেশের মূলগেট পর্যন্ত এলাকায় আশপাশে দখলে থাকা বনভূমি উদ্ধারের পর তৈরি করা হচ্ছে বাস-মাইক্রোবাস এবং মোটরসাইকেলের আলাদা পার্কিং। সেই পার্কিং লাগোয়া পূর্বপাশেই গড়া হচ্ছে উড়ন্ত সাদা পায়রা হাতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। ভাস্কর্য এলাকাটি সম্প্রসারণ করে দেওয়া হচ্ছে সবুজের আবরণ। সুপরিসর এলাকায় বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে ফুল বাগান।

পার্কের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রথম সাফারি পার্ক ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। প্রকৃতির আঁধার সমৃদ্ধ এ পার্ক ধীরে ধীরে এতদঞ্চলের বিনোদনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। তাই পার্ককে কেন্দ্র করে মহাসড়কেই গড়া হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন প্রবেশ ফটক। চলছে সড়ক প্রসস্তকরণের কাজ। দু’লেনের সড়কে গড়া হচ্ছে টাইলস সমৃদ্ধ ফুটপাত। রাস্তার ধারের বিদ্যমান পুরোনো টিকিট কাউন্টার সরিয়ে তৈরি হচ্ছে সুপরিসর টিকিট ঘর।

ঘুরতে আসা পর্যটকদের লাগেজ ও প্রয়োজনীয় মালামাল রাখতে যুক্ত হচ্ছে লকার রুম। সঙ্গে থাকছে দর্শনার্থী অপেক্ষা কক্ষও। সংস্কার হচ্ছে ডরমেটরি ও ব্যারাক। করা হচ্ছে মানের ওয়াশরুমও।

তিনি আরো বলেন, সবকিছুকে ছাপিয়ে সবুজের মাঝে দাঁড় করানো হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে। আগের জায়গাটি প্রসস্ত করে বঙ্গবন্ধু চত্বরে প্রবেশ-বাহির ফটক সম্প্রসারণ হচ্ছে। ভাস্কর্যের চারপাশে ল্যান্ডস্কেপ ডিজাইনে করা হচ্ছে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি। তৈরি হচ্ছে জয়সিয়া ঘাসের লেন। সেখানে বসানো হচ্ছে সয়ংক্রিয় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। করা হবে সবুজের বেষ্টনী ও নানা ধরনের ফুল বাগান।

jagonews24

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে যেন বসে ছবি তোলা যায় তা নিশ্চিত করতে সামনের ভূমি উন্নয়ন করে সেখানে বসানো হবে পাথরের বেঞ্চ। গত বছরের ১ জুলাই শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ৩০ জুন সমাপ্ত হলে পার্কের বাইরে এ অংশটি হবে চেয়ে থাকার মতো।

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় ১৯৯৯ সালে পথচলা শুরু ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের। ভেতর-বাইরে ৯০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে যাত্রা করা পার্কে বিপুল পরিমাণ মাদার ট্রিসহ (গর্জন) রয়েছে নানা প্রজাতির বনজ গাছ। শুরু থেকেই সবুজের সমাহারে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশের পার্কটি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনের সহায়ক হওয়ার পাশাপাশি আশপাশ এবং বিভিন্ন এলাকার মানুষের বিনোদনের অনুষঙ্গ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সপ্তাহের মঙ্গলবার ছাড়া বাকি ৬ দিন দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস মিশে যায় প্রাণীকূলের কোলাহলের সঙ্গে।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ১৯টি বেষ্টনীর মধ্যে সংরক্ষিত আছে বিচিত্রসব প্রাণী। পার্কের ভেতরে নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তায় উন্মুক্ত ও আবদ্ধভাবে রয়েছে হাতি, বাঘ, সিংহ, জলহস্তি, গয়াল, আফ্রিকান জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, ভাল্লুক, বন্য শুকর, হনুমান, ময়ূর, স্বাদু ও লোনা পানির কুমির, সাপ, বনগরুসহ দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির প্রাণী। পার্ক জুড়ে রয়েছে চিত্রা, মায়া, সম্বর ও প্যারা হরিণ। রয়েছে নাম জানা-অজানা কয়েকশ ধরনের পাখি। এর পাশাপাশি পার্কে দেখা মেলে কালের সাক্ষি বিশালাকার দুর্লভ ও মূল্যবান বৃক্ষরাজি। সেসব গাছেই বানরের লাফালাফির নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।