বৃষ্টির হাতের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:৫৭ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২২

মাত্র আড়াই হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে অনলাইনে খাবারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বৃষ্টি। এখন তার মাসে আয় ৩০ হাজার টাকার বেশি। বৃষ্টির হাতের ছোঁয়ায় তার অভাব-অনটনের সংসারে এসেছে সচ্ছলতা।

বৃষ্টি উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বৈরতলা গ্রামের বাইরুল ইসলামের স্ত্রী। প্রথমে তার খাবার কেবল এলাকার লোকজন কিনলেও এখন তার খাবারের চাহিদা জেলাজুড়ে।

সরেজমিন উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বৈরতলা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ফেসবুকে ‘ড্রিম ফুড’ নামে একটি পেজ খুলে মাত্র ২ হাজার ৫০০ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন বৃষ্টি। প্রথমে কেবল স্থানীয় লোকজন তার খাবার কিনতেন। খাবারের মান ভালো হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তার ব্যবসার পরিধি। এখন তার প্রতিমাসে সব খরচ বাদ দিয়ে আয় ৩০ হাজার টাকার বেশি।

jagonews24

বৃষ্টি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ইউটিউবে সিরাজগঞ্জের তিন বোনের অনলাইনে খাবার বিক্রির প্রতিবেদনটি চোখে পড়ে। এটি দেখে আমি অনলাইনে ব্যবসা করার উৎসাহ পাই। পরে স্বামীকে জানালে সে-ও উৎসাহ দেয়। নিজে বাজারে গিয়ে জিনিসপত্র ও পণ্য কিনে এনে ব্যবসা শুরু করি। প্রথমে এলাকার লোকজন আমার খাবার কিনতে থাকে। পরে ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে জেলাজুড়ে। এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খাবারসহ ফাস্ট ফুডের অর্ডার নিয়ে থাকি। তা নিজস্ব পরিবহনে পৌঁছে দেওয়া হয়। খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য একজনকে নিয়োগ দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমি ফাস্ট ফুড, মোমো, বিরিয়ানি, রাইসবোল, পাস্তা, ফ্রাইড রাইস, চায়নিজ, চাওমিন, চিকেন ফ্রাই, পিৎজা, বার্গার, শর্মা ও সকালের নাস্তাসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার অর্ডার অনুযায়ী তৈরি করে থাকি। তাছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, চাকরিজীবী, হোস্টেল, মেসে তিনবেলা খাবার দিয়ে থাকি। এতে আমার এখানে এলাকার বেকার ৭-৯ নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। আমি গ্রামের আরও বেকার নারীদের সম্পৃক্ত করতে চাই।

jagonews24

প্রতিবেশী শিক্ষক তোফিজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে বিক্রির মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছে। এ কাজে এলাকার নারীরা তাকে সাহায্য করছে। এভাবে ব্যবসা ধরে রাখতে পারলে আগামীতে সে আরও ভালো করবে।

বৃষ্টির স্বামী বাইরুল ইসলাম বলেন, প্রথমে আমার স্ত্রীকে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তার আগ্রহ দেখে আর বাধা দিতে পারিনি। ২ হাজার ৫০০ টাকায় ব্যবসা শুরু করে এখন মাসে ৩০ হাজার বেশি আয় তার। আমার অভাব-অনটনের সংসারে এখন ফিরে এসেছে আর্থিক সচ্ছলতা। তার এখন মাসে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার খাবার বিক্রি হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামিউল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি ফেসবুকে খাবারের ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হয়েছে। এতে এলাকার লোকজন অনেক খুশি। কারণ তার ব্যবসার সুবাদে এলাকার মেয়েরা কাজের সুযোগ পেয়েছে। এখন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তার কাছে বিভিন্ন ধরনের খাবার অর্ডার করে থাকে।

সোহান মাহমুদ/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।