ভেড়া পালন-সবজি চাষে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছেন চরবাসী

নদীবেষ্টিত দেশের উত্তরের জনপদ গাইবান্ধায় জেগে ওঠেছে শতাধিক চর। চরাঞ্চলের অধিকাংশ পরিবারই দরিদ্র। তবে অঞ্চলের ভূমিতে কৃষি অর্থনীতি উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনা জাগিয়েছে। মানুষদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনও শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে উন্নত জাতের ভেড়া পালন ও শাক-সবজি উৎপাদন করে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছেন চরবাসীরা।
গাইবান্ধা জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার দরিদ্র নারীরা ঝুঁকে পড়ছে ভেড়া পালন ও শাক-সবজি উৎপাদনে। ফ্রেন্ডশিপ নামের বেসরকারি উন্নয়ন একটি সংস্থা চরাঞ্চলবাসীকে স্বাবলম্বী করার কাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলের জমি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। একই সঙ্গে চরের পরিবেশ ভেড়া পালনের জন্য উপযোগী হওয়ায় চরবাসীদের জন্য কাজ করছে ‘ফ্রেন্ডশিপ’ সংস্থা। ওই তিন উপজেলার দুই শতাধিক দরিদ্র মানুষকে বিভিন্ন সবজি বীজ ও ভেড়া সরবরাহ করে তারা। যাতে সুবিধাভোগীরা অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হতে পারে। এতে এএসডি প্রকল্পের আওতায় নির্বাচিত চরবাসীদের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ বিভিন্ন সবজি ও উচ্চ জাতের মানসম্পন্ন বীজ বিতরণ করেছে।
এরআগে, ক্লাইমেট অ্যাকশন সেক্টরের অধীনে এএসডি প্রকল্পের উদ্যোগে উপকারভোগীদের সফল সবজি চাষ এবং ভেড়া পালনের উপর প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
এ প্রকল্প থেকে সহায়তা প্রাপ্তির পর সুবিধাভোগীরা তাদের নিজ নিজ বসতভিটাতে সবজি চাষ ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে চরের জমিতে ভেড়া পালনে মনোযোগ দেন। যার ফলে সবজি চাষ ও ভেড়া পালন থেকে অর্থনৈতিক মুনাফা অর্জন করে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থারও পরিবর্তন শুরু করেছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চর মাদারবাড়ির নারী সুবিধাভোগী মতিজান বেগম জাগো নিউজকে বলেন, পরিবারের সদস্যের নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছিলাম। স্বামী দিনমজুর। এ অবস্থায় ওই প্রকল্পের সহায়তায় নিজের বসতভিটাতে সবজি চাষ ও খোলা চরে ভেড়া পালন শুরু করেছি। ধীরে ধীরে একটি ভেড়া থেকে এখন ৬টি ভেড়া হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভেড়া বিক্রি করে লাভবান হয়েছি।
আনজুমান আরা বেগম নামের আরেক সুবিধাভোগী জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য সুবিধাভোগীদের মতো প্রকল্প থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দামের একটি ভেড়া ও ষোল জাতের সবজির বীজ পেয়েছি। চরের জমিতে ভেড়া পালন এবং বসতবাড়িতে সবজি চাষের পর ভেড়ার সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি বসতভিটাতেও ব্যাপক হারে লাউসহ সবজি চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন ভেড়ার দাম দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে এএসডি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জাগো নিউজকে বলেন, মতিজান এবং অনজুমানের মতো আরও অনেক নারী ফ্রেন্ডশিপের প্রকল্পের সহায়তায় লাভবান হচ্ছেন। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।
জেএস/জেআইএম