গরমে কদর বেড়েছে হাতপাখার

তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ের কারণে ঝালকাঠিতে বেড়েছে হাতপাখার কদর। গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফেরি করে হাতপাখা বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় হাতপাখা তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততাও রয়েছে কয়েকগুণ।
শহরের কাঁসারিপট্টি এলাকার পাইকারি পাখা বিক্রির দোকানদার নারায়ণ রায় জানান, গরম পড়া শুরু করলে হাতপাখার কদর বাড়ে। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে হাতে তৈরি হাতপাখার। গরমের শুরুতে আগে প্রতিদিন ৫০-৭০ পিস বিক্রি হলেও এখন বিক্রি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
চাহিদা বাড়ায় পাখার দামও বেড়েছে। আগে বাঁশের হাতল দিয়ে তৈরি প্রতি পিস হাতপাখার দাম পড়তো ১০ টাকা। এখন সেগুলো ১৫-১৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি দোকানদার প্রকাশ জাগো নিউজকে বলেন, ‘গরমের শুরুতেও হাতপাখার চাহিদা এত ছিল না। হঠাৎ করে গরম বেশি পড়ায় এবং লোডশেডিংয়ের কারণে পাখার চাহিদা বেড়েছে।
কথা হয় হাইলাকাঠি থেকে পাইকারি দামে হাতপাখা কিনতে আসা ব্যবসায়ী প্রদীপের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘একে তো প্রচণ্ড গরম, তার ওপর ঘন ঘন লোডশেডিং। লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেশি থাকায় এখন পাখার কদর তুঙ্গে।’
প্রদীপ বিক্রি করেন প্লাস্টিকের মাদুর কেটে তৈরি বিশেষ হাতপাখা। এগুলো তালপাতার তৈরি নয়। প্লাস্টিকের মাদুর কেটে টিস্যু ব্যাগের কাপড় দিয়ে চতুর্দিক সেলাই করে নির্দিষ্ট মাপের হাতপাখা তৈরি করা হয়। এ পাখায় বাঁশের কঞ্চি বা সুপারি গাছের চিকন হাতল তৈরি করে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে পাখার স্থায়িত্ব বাড়ে বলে জানান তিনি।
হাতপাখা ক্রেতা স্কুলশিক্ষিকা ইভানা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘যে গরম পড়ছে তা সহ্য করার মতো নয়। একদিকে গরম অন্যদিকে লোডশেডিং। এতে জনজীবন হাঁপিয়ে উঠেছে। তাই ৩৫ টাকা দিয়ে দুটি হাতপাখা কিনেছি।’
কৃষক বিকাশ হালদার বলেন, ‘মাঠে-ঘাটে কাজ করার সময় তীব্র রোদে শরীর পুড়ে যায়। কিছুক্ষণ কাজ করার পর শরীর ঘেমে যায়। তখন আর কাজ করতে ইচ্ছা করে না। তাই কাজের ফাঁকে হাতপাখার বাতাসে শরীরটা একটু জিরিয়ে নিই।’
ঝালকাঠি বিসিকের উপপরিচালক শাফাউল করিম বলেন, হাতপাখা তৈরি করে বিক্রি একটি মৌসুমি ঘরোয়া ব্যবসা। যদি কেউ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ ব্যবসাকে সম্প্রসারিত করতে চান তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহায়তা করা যাবে।
আতিকুর রহমান/এসআর/জেআইএম