ঋণ প্রবাহ বাড়িয়ে মুদ্রানীতি দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কিছুটা বাড়িয়ে চলতি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য নতুন মুদ্রানীতি দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ ধরা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ। গত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ ছিলো ১৪ শতাংশ। ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ব্যাপক মুদ্রার যোগান ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন এই মুদ্রানীতিকে বলছে, সংযত ও সংহত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান নতুন এই মুদ্রানীতি আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের চেইঞ্জ ম্যানেজম্যান্ট পরামর্শক আল্লাহ মালিক কাজমী, প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল, ডেপুটি গভর্নররা উপস্থিত ছিলেন।
মুদ্রানীতি ঘোষণা করে আতিউর রহমান বলেন, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের মাত্রা একটি অংশ মাত্র। আমরা এটি যেকোন সময় আরো বাড়াতে প্রস্তুত। ব্যবসায়িদের ঋণ প্রবাহ নিশ্চিত করতে আমাদের পক্ষ থেকে উদারিকরণ ভূমিকা থাকবে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে বৈদেশিক অর্থায়ন অব্যাহত থাকবে। তবে রাজনৈতিক সংকটে শঙ্কা রয়েছে। তাই অর্থ বছরের দ্বিতীয় মুদ্রানীতিতে নতুন কোন শিথিলতা বা কঠোরতার পক্ষে নয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতির ক্ষেত্রে যেন আগের ধারাবাহিকতাই বজায় রাখা হয়েছে।
আতিউর বলেন, নভেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ দাড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। মুদ্রানীতিতে প্রবৃদ্ধির যে যোগান রাখা হয়েছে তা অনুকূল পরিবেশে জিডিপি’র সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যথেষ্ট।
তিনি বলেন, মুদ্রানীতি আর্থিক খাতের পাশাপাশি পুজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখবে।
মুদ্রানীতিতে বলা হয়, বিনিয়োগ ও উৎপাদন বান্ধব সংস্কারের ধারা অর্থ বছরের দ্বিতীয় মেয়াদে বজায় থাকবে এবং জোড়দার করা হবে। তবে রাজনৈতিক সংকটে ব্যবসায়িরা ঋণ নিতে আসবেন কিনা প্রশ্নে আতিউর রহমান বলেন, আশা করি সংকট কেটে যাবে।
তিনি বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক খাতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এবং পরিশোধে শৃংখলার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি আরো কঠোর করা হবে। দক্ষতা, স্বচ্চতা ও জবাবদিহিতা বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
এসময় সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন দেওয়া বড় ঋণের পুনর্গঠন নীতিমালা চুড়ান্ত নৈতিকতা বিরোধী কিনা জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, এটি আন্তজার্তিক আচারণ মেনে করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য এই সিদ্ধান্ত। তবে প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে। যারা জালয়াতি করেন, ঋণের কিস্তি সময় মতো পরিশোধ করবেন না, তারা এই সুযোগ পাবেন না।
তবে যারা ভালো ব্যবসায়ী, নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেন তাদেরকে পুরস্কৃত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালা তৈরির কাজ করছে।
নতুন মুদ্রানীতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ থেকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ মালিক কাজমী বলেন, মুদ্রানীতি ঋণ প্রবাহ অব্যাহত রাখা হয়েছে। যাতে বিনিয়োগ হয়, প্রবৃদ্ধি ভালো হয়।
এসএ/আরএস