বাজারে এসেই ২২ শতাংশ দর হারিয়েছে ইফাদ অটোস


প্রকাশিত: ০৫:০৪ এএম, ০৮ মার্চ ২০১৫

বাজারে আসতে না আসতেই বড় দর পতন ঘটেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান ইফাদ অটোস লিমিটেডের। বাজার আসার পর গত এক মাসে দর কমেছে ২২ শতাংশ। টাকার হিসেবে ১৫ টাকা ৪০ পয়সা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সদ্য তালিকাভুক্ত ইফাদ অটোস আইপিও প্রক্রিয়ায় মূলধন উত্তোলনের পর ৫ ফেব্রুয়ারি সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইফাদ অটোসের শেয়ারপ্রতি ফেস ভ্যালু ১০ টাকার সঙ্গে বাড়তি ২০ টাকা প্রিমিয়াম মিলে শেয়ারপ্রতি মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৩০ টাকা। আইপিও প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতার পর ইফাদ অটোস লেনদেন শুরুর প্রথম কার্যদিবসে (৫ ফেব্রুয়ারি) ওপেনিং শেয়ার দর ছিল ৪০ টাকা। প্রথমদিনেই শেয়ার দর ৪০ টাকা থেকে ৬৯ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। সেইদিন ৬৭ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়। অর্থাৎ প্রথম দিনে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর ৩৭ টাকা ৭০ পয়সা বা ১২৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ বাড়ে। প্রথম দিনে কোম্পানির ১ কোটি ১৬ লাখ ৯৭ হাজার শেয়ার ৫৫ হাজার ৩৫৫ বার হাতবদল হয়। টাকার অংকে মোট ৭৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।

জানা যায়, সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারে লেনদেনের দ্বিতীয় দিন ৮ ফেব্রুয়ারি শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ৭০ টাকা হয়। কিন্তু এক মাস যেতেই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর ৭০ টাকা থেকে নেমে ৫৪ টাকা ৬০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ ইফাদ অটোস শেয়ারের লেনদেন হয়েছে বৃহস্পতিবার ৫৫ টাকা ১০ পয়সায়। সমাপনী মূল্য নির্ধারিত হয় ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা।

গত এক মাসে ২০ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ইফাদ অটোসের দর কমেছে ১১ দিন আর বেড়েছে ৯ কার্যদিবস।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারে নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার আসলে বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারের প্রতি আগ্রহ একটু বেশি থাকে। আবার অনেকে কিছু না বুঝেই বিনিয়োগ করেন। যার কারণে শেয়ারের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদা বাড়ায় প্রথমদিকে শেয়ারের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। কিন্তু পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়।

এছাড়াও বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাজারের অবস্থা খুব একটা ভালো না। গত দুই মাস ওঠানামার মধ্যদিয়ে বাজারের লেনদেন চলছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারে লেনদেনে তেমন সক্রিয় নয়। যার কারণে বাজার আশানুরূপ ইতিবাচক নয়।

‘এন’ ক্যাটাগরির আওতায় ইফাদ অটোসের শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে। পরবর্তী বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) পূর্ব পর্যন্ত শেয়ারটি ‘এন’ ক্যাটাগরিতে থাকবে। শেয়ারবাজারে ইফাদ অটোস মোট ১১ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ৬২ দশমিক ৭৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ২০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।

কোম্পানির বর্তমান অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১১৫ কোটি টাকা। কোম্পানিটির রিজার্ভ রয়েছে ৩১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। লেনদেনের আগে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে লটারিতে বরাদ্দ পাওয়া শেয়ার জমা করেছে।

ইফাদ অটোস পুঁজিবাজার হতে ২ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার ছেড়ে ৬৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। তার জন্য কোম্পানিটির আইপিওতে ১ হাজার ২৩ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার আবেদন জমা পড়ে। যা কোম্পানির উত্তোলনকৃত টাকার ১৬ দশমিক শূন্য ৫ গুণ বেশি।

পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহিত অর্থ দিয়ে কোম্পানির অ্যাসেম্বিং প্লান্ট, গাড়ির বডি বিল্ডিং ইউনিট নির্মাণ এবং প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করবে বলে জানানো হয়।

১০ টাকা অভিহিত মূল্যের সঙ্গে ২০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। ২০০টি শেয়ারে মার্কেট লট।

৩০ জুন ২০১৪ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ১৬ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে (রিভেলুয়েশনসহ) ৪৪ টাকা ১২ পয়সা। এর ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করছেন বেনকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।

ইফাদ অটোস কোম্পানি ১৯৮৫ সালে আত্মপ্রকাশ করে। ইফাদ গ্রুপের ইফাদসহ মোট ৮টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি কোম্পানি তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বেশ ভালোভাবেই পরিচালনা করেছে। কোম্পানিগুলো হচ্ছে ইফাদ অটোস লিমিটেড, ইফাদ এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, ইফাদ অটোমোবাইলস লিমিটেড, ইফাদ এগ্রো কমপ্লেক্স লিমিটেড, ইফাদ মাল্টি প্রডাক্টস লিমিটেড ও ইফাদ মাল্টি এন্ড ক্যামিকেলস লিমিটেড। সব প্রতিষ্ঠানে রয়েছে অভিজ্ঞ পরিচালক মণ্ডলী। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পুঁজিবাজারে আওতাভুক্ত হয়নি।

এসআই/এসএ/বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।