প্রেস ক্লাবের সামনে রণক্ষেত্র
পুলিশের অ্যাকশনের মুখে সম্মিলিত মোনাজাতে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা
নন-এমপিও শিক্ষকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাদের ওপর জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপরও শিক্ষকরা না সরলে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ।
নন-এমপিও শিক্ষকদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপরও চড়াও হন পুলিশ সদস্যরা। এসময় অবস্থান ধরে রাখতে কৌশলে সম্মিলিত মোনাজাতে বসেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা।
মোনাজাতরত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের চারদিক দিয়ে পুলিশ কিছুক্ষণ ঘিরে রাখলেও তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরই মোনাজাত শেষ করে ফের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা।
রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ দৃশ্য দেখা যায়। এ নিয়ে উপস্থিত পুলিশ সদস্য ও উৎসুক মানুষের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।

তবে ইবতেদায়ি শিক্ষকরা জানান, তারা মাদরাসার শিক্ষক, ইসলাম ধর্মের অনুসারী। সেই হিসেবে তারা যে কোনো বিপদ-আপদ আসলে আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন, দোয়া করেন।
আরও পড়ুন
সাউন্ড গ্রেনেড-জলকামানে ছত্রভঙ্গ নন-এমপিও শিক্ষকরা
শিক্ষকদের ‘কলম সমর্পণ’ পণ্ড, খায়রুন নাহার লিপিসহ আহত শতাধিক
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থেকে আসা ইবতেদায়ি শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করছি। পুলিশের সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়ায়নি। তাহলে তারা কেন অযথা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করবে? আমাদের নেতারা সম্মিলিত মোনাজাতের মাধ্যমে সম্ভাব্য ঝামেলা থেকে শিক্ষকদের বাঁচিয়েছেন।
হঠাৎ মোনাজাত ধরার বিষয়ে তিনি বলেন, ইসলাম আমাদের শিখিয়েছ যে কোনো বালা-মুসিবত এলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করতে হবে। আল্লাহই সব বিপদ থেকে রক্ষা করবেন। এখানে সেটাই ঘটেছে। এটা হাসি-ঠাট্টার কিছু নেই। আমরা প্রায়ই এমন মোনাজাত করি।
জানা যায়, সরকারের অতি অল্প অনুদানে প্রায় ৪০ বছর ধরে ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলো পরিচালিত হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষকরা ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে টানা আন্দোলন করেন। একপর্যায়ে সরকার ২৮ জানুয়ারি ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ করার ঘোষণা দেয়।
তবে জাতীয়করণের আগে ধাপে ধাপে মাদরাসাগুলো প্রথমে এমপিওভুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়। সেই আশ্বাস দীর্ঘদিনেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা।
এএএইচ/কেএসআর/জিকেএস