ওয়ার্নার ব্রাদার্স-নেটফ্লিক্স ৮৩ বিলিয়ন ডলার চুক্তির বাধা ট্রাম্প

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩৬ এএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ট্রাম্প চ্যালেঞ্জের মুখে ঐতিহাসিক চুক্তিটি

বিনোদনের দুনিয়ায় ঘটে গেছে দারুণ এক চমক। ঐতিহাসিক এক চুক্তিতে ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির ফিল্ম ও স্ট্রিমিং ব্যবসা কিনতে চলেছে নেটফ্লিক্স। কমকাস্ট ও প্যারামাউন্টকে হারিয়ে এ চুক্তির পথে এগিয়ে গেছে নেটফ্লিক্স। প্রায় ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে হচ্ছে চুক্তিটি।

তবে এটি এখনই কার্যকর হচ্ছে না। এটি কার্যকর হতে হলে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন লাগবে। বিশেষ করে এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে উঠে আসছে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম। কারণ ফেডারেল সংস্থাগুলোর ওপর তার প্রভাব অনেক।

ট্রাম্প এখনো প্রকাশ্যে এই চুক্তি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে হোয়াইট হাউসসহ রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে, নেটফ্লিক্স যদি এই অধিগ্রহণ সম্পন্ন করে তবে এটি বিরাট বাজার তৈরি করবে।

আরও পড়ুন
অপমানজনক সেই নগ্ন দৃশ্য নিয়ে মুখ খুললেন জেসিকা
অবশেষে প্রেমের ঘোষণা দিলেন জাস্টিন ট্রুডো-কেটি পেরি

শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এই চুক্তি নিয়ে হোয়াইট হাউসে গভীর সংশয় রয়েছে। নেটফ্লিক্স ও ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি (ডব্লিউবিডি) জানিয়েছে, তারা ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করার আশা করছে। শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্র পাওয়ার পর তারা বাকি কাজ সারার প্রস্তুতি নেবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে এই চুক্তি বিচার বিভাগ এবং বাণিজ্য কমিশনের প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে পারে। তবে এটি সম্প্রচার নেটওয়ার্ক জড়িত নয় বলে গণযোগাযোগ কমিশনের অনুমোদন লাগবে না।

নেটফ্লিক্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা অনুমোদন পাওয়া নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। এমনকি চুক্তি বাতিল হলে ডব্লিউবিডিকে ৫.৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানাও দিতে রাজি হয়েছে নেটফ্লিক্স।

নেটফ্লিক্সের সহ-প্রধান নির্বাহী টেড সারানদোস বলেন, ‘আমরা পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী। এটি ভোক্তা, উদ্ভাবন, কর্মী, নির্মাতাসহ সবার জন্যই ভালো। নেটফ্লিক্স ও ওয়ার্নার ব্রাদার্সের কাজ সবার জন্যই পরিপূরক।’

ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারির প্রধান নির্বাহী ডেভিড জাসলাভও কর্মীদের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে খুব কম অমিল রয়েছে। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আর নেটফ্লিক্স সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম।’

নেটফ্লিক্স প্রাথমিকভাবে এইচবিও ম্যাক্স ও ওয়ার্নার ব্রাদার্সের স্টুডিও আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালাবে। ওয়ার্নার ব্রাদার্সের চলচ্চিত্র প্রথমে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে সেটি নেটফ্লিক্সে আসবে।

জানা গেছে, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে এলিসন পরিবারকে পছন্দ করেন। তিনি এই চুক্তির পথে বাঁধা হবেন না। যদিও ট্রাম্প বিরোধিতা করলেও চুক্তি আটকে যাবে এমন নিশ্চয়তা নেই। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন এটিঅ্যান্ডটির টাইম ওয়ার্নার অধিগ্রহণ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আদালত সেই প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়।

এদিকে আরেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট অভিযোগ করেছে, নেটফ্লিক্সকে সুবিধা দিতেই ডব্লিউবিডি একপেশেভাবে দরপত্র পরিচালনা করেছে। তাদের মতে, নেটফ্লিক্স-ওয়ার্নার ব্রাদার্স একীভূত হলে বাজারে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হবে।

লেখক সংগঠন এবং প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের সংগঠনসহ হলিউডের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও এই চুক্তির বিরোধিতা করছে। তারা বলছে, এতে চাকরি ও প্রতিযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের আইনপ্রণেতারাও বিরোধিতা করছেন। সেনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, ‘এটি একচেটিয়া বাজার তৈরির ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হবে, যা মানুষের খরচ বাড়াবে ও বিকল্প কমিয়ে দেবে।’

নেটফ্লিক্স বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৩০ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে এগোচ্ছে। ওয়ার্নার ব্রাদার্স ডিসকভারি রয়েছে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক। দুটি প্রতিষ্ঠান এক হলে তারা যে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে যাবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এলআইএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।