বিশ্বের ৩ ভূতুড়ে স্থান

ভূত দেখেছেন কখনো? বেশিরভাগ মানুষেরই উত্তর হবে কখনো দেখিনি। তারপরেও একা থাকলে কিংবা রাতের আঁধারে আমরা যেই ভয়টি সবচেয়ে বেশি পাই তা হলো ভূত। এই ভূত বা অতৃপ্ত আত্মা নিয়ে নির্মিত হয়েছে একাধিক সিনেমা, টেলিভিশন সিরিজ। যেখানে অতৃপ্ত আত্মাদের কার্যকলাপ, স্থান ফুটিয়ে তোলা হয়।
তবে শুধু সিনেমায় নয় বাস্তবেও এমন কিছু স্থান রয়েছে, যেখানে ভূতের দেখা না মিললেও প্যারা নরমাল অ্যাক্টিভিটিস লক্ষ্য করা গেছে। এই জায়গাগুলোতে জনসাধারণের প্রবেশের অনুমতি নেই। ভয়ে সেখানে কেউ যেতে চান না। চলুন জেনে নেই বিশ্বের এই ভয়ানক স্থানগুলো সম্পর্কে।
আরও পড়ুন: ১১ বছর ধরে ঘুমান না তিনি
ইংল্যান্ডের বরলে রেক্টরি
অনেক আগের কথা। ১৮৬৩ সালে হেনরি ডাউসন এলিস বুলের জন্য একটি রেক্টর নির্মাণ করা হয়। সে সময় ইংল্যান্ডের বড়লে রেক্টরের জাতের ছেলেদের সমজাতীয় ছাড়া অন্য জাতের মেয়েদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু একটি ছেলে নিজ জাতের বাইরে যেয়ে এক সন্ন্যাসিনীর প্রেমে পড়ে। সমাজ আর পরিবার মেনে না নেয়ায় তারা পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পালানোর মাঝ পথেই তারা ধরা পড়ে যায়। তারপর সেই সন্ন্যাসিনীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। তবে কেউ কেউ বলেন এই রেক্টরের মধ্যেই নাকি তাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই এই বরলে রেক্টরে অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটতে শুরু করে।
১৯৪৪ সালে বিখ্যাত লাইভ ম্যাগাজিনের বিষয় প্রতিবেদনে ইংল্যান্ডের বরলে রেক্টরি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানে বলা হয় তাদের ম্যাগাজিনে প্রকাশের জন্য কিছু ছবি দরকার ছিল। তাই এক আলোকচিত্ৰকর সেখানে যায়। কিন্তু কেউ একজন তাকে ইটের টুকরো ছুড়ে মারছিল। এরপর থেকে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভূতুড়ে স্থান হিসেবে বরলে রেক্টরিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
ভারতের রাজস্থানের ভানগড়ের প্রাসাদ
ভানগড়ের প্রাসাদের সুন্দরী রানি রত্নাবতী। তৎকালীন সময়ে রানিকে বিয়ে করার জন্য অনেক স্থান থেকে অনেক রাজা-মহারাজাদের প্রস্তাব আসতে শুরু করে। তবে এক জাদুকর রানিকে ভীষণ পছন্দ করতেন। কিন্তু রানি তাকে একদমই পাত্তা দিতেন না। তাই জাদুকর রানির সুগন্ধির ভেতর নিজের জাদু প্রয়োগ করে। তবে রানি গুপ্তচরের মাধ্যমে এ কথা জেনে যান।
আরও পড়ুন: এক পেন্সিলে দাগ কেটে যাওয়া যাবে ৩৫ মাইল
এরপর জাদুকরকে রানি নানা কৌশলে পরাজিত করলেও জাদুকর মৃত্যুর আগে রানিকে অভিশাপ দিয়ে যায়। এর এক বছরের মাথায় একটি যুদ্ধে পুরো শহর ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রতি রাতে কেল্লার ভেতর থেকে পায়েলের শব্দ শোনা যায় সঙ্গে কান্নার আওয়াজ। এছাড়াও মানুষকে আকৃষ্ট করার বিশেষ সুগন্ধি রাতের বেলা ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এই প্রাসাদের চারপাশ ভারতের সবচেয়ে ভূতুড়ে পরিবেশের মধ্যে একটি।
অস্ট্রেলিয়ার মন্টে ক্রিস্ট হোমস্টিড
ভূতুড়ে বাড়ি হিসেবে বেশ পরিচিত অস্ট্রেলিয়ার মন্টে ক্রিস্ট হোমস্টিড। জানা যায় এই বাড়ির মালিক যখন মারা যান তখন তার স্ত্রী একেবারেই ভেঙে পড়েন। তিনি মনস্থির করেন এই বাড়ি ছেড়ে কখনো বের হবেন না। দীর্ঘ ২৩ বছর এই বাড়ির মধ্যেই থাকেন তিনি। একটা সময় তার আপনজনরা সবাই তাকে ছেড়ে চলে যায়। তবুও সে বাড়ির বাইরে হননি।
একদিন ঐ বাড়ির মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। ঠিক কবে তিনি মারা যান সঠিক দিনক্ষণ অবশ্য কেউ জানেন না। তার লাশটা বাড়ির ভেতর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পচে গেলে পরিবেশের সঙ্গে মিশে যায়। তারপর থেকেই শুরু হয় ভৌতিক সমস্যা। অনেকেই এই বাড়িটাকে দখল করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু নানা ভৌতিক সমস্যার কারণে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন তারা। এলাকাবাসীর মতে সেই মালিকের স্ত্রী এখনো এই বাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। রাতের বেলা শোনা যায় তার কান্নার আওয়াজ।
কেএসকে/এমএস