ডা. জিকরুল ইসলাম
মানসিক চিকিৎসায় টেলিমেডিসিন ও রেফারেল সিস্টেম চালু করতে হবে
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম জিকরুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত এবং এই ১৮ শতাংশের মধ্যে মাত্র ৬–৮ শতাংশ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আছে। অর্থাৎ ৯৪ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবার বাইরে। সেজন্য প্রপার রেফারেল বা টেলিমেডিসিন স্বাস্থ্যসেবা খুবই জরুরি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে সবাই মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত না। কিন্তু ওভারঅল হিসাব করলে দেখা যায়- মানসিক চাপ, অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সারা বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের জন্য মাত্র ২৭০-৩০০ জন (আনুমানিক) মানসিক রোগের ডাক্তার আছে। এভাবে পার হেড একজন সাইকিয়াট্রিস্টকে কতজন মানুষ হ্যান্ডেল করতে হয়, তা কল্পনা করা যায় না। সেজন্য মানসিক চিকিৎসায় টেলিমেডিসিন বা রেফারেল সিস্টেমটা চালু করতে হবে। তাহলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা অনেক এগিয়ে যাবে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাগোনিউজ২৪.কম আয়োজিত ‘বিপর্যয়-জরুরি অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন
অক্সিজেনকে ওষুধের মতো সহজলভ্য করতে হবে: স্বাস্থ্যের বিশেষ সহকারী
শহরে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার অনেক দুর্বল: স্বাস্থ্য সচিব
মানসিক চিকিৎসার উন্নতি নিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো সময় যে কোনো জায়গায় দুর্যোগ হতে পারে। সেজন্য প্রত্যেক উপজেলা ও জেলায় আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। পাশাপাশি জরুরি ওষুধ রাখতে হবে। বর্তমানে মাত্র ১০টা জেলা ও উপজেলায় কিছু কিছু ওষুধ এসেছে। কিন্তু আমাদের বেশিরভাগ উপজেলা বা জেলায় কোনো সাইকিয়াট্রিস্ট নেই, কোনো ওষুধের সাপ্লাইও নেই। ২০১৮-১৯ সালের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সার্ভে অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত এবং এই ১৮ শতাংশের মধ্যে মাত্র ৬–৮ শতাংশ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আছে। অর্থাৎ ৯৪ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবার বাইরে। সেজন্য প্রপার রেফারেল বা টেলিমেডিসিন স্বাস্থ্যসেবা খুবই জরুরি।
মেন্টাল হেলথ সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট সেলের কার্যক্রম বাড়াতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কোনো দুর্যোগের পরবর্তীতে আমাদের প্রস্তুতির অনেক গ্যাপ আছে। সেজন্য প্রস্তুতি হিসেবে বলতে গেলে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে মেন্টাল হেলথ সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট সেল- এটাকে আমরা আরও কার্যকর করতে পারি। তাদের অধীনে যে হেলথ কমপ্লেক্সগুলো আছে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত, প্রত্যেকটা জায়গায় হেলথকেয়ার প্রোভাইডার ডাক্তার, নার্স, স্টাফ আছে। তাদের প্রত্যেককে যদি আলাদা আলাদাভাবে ট্রেনিং দেওয়া যায়, অথবা তাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা যায়, তাহলে আমরা দুর্যোগগুলোকে আরও সুন্দরভাবে মেইনটেইন করতে পারবো।
আরএএস/এএমএ/জিকেএস