ঘুসের মামলায় দোষী সাব্যস্ত কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:০৭ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৫
কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আলভারো উরিবে। ছবি: ফেসবুক@আলভারো উরিবে

ঘুস ও সাক্ষ্য প্রভাবিত করার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আলভারো উরিবে। সোমবার (২৮ জুলাই) দেশটির এক বিচারক এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন, যা কলম্বিয়ার রাজনীতিতে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবার কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট এ ধরনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন।

বিচারক সান্দ্রা লিলিয়ানা হেরেদিয়া জানান, উরিবে ২০১২ সালে এক সিনেটরের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়েরের পর নিজেই তদন্তের মুখোমুখি হন। বিচারকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, উরিবে একজন আইনজীবীর সঙ্গে মিলে কারাগারে থাকা তিনজন সাবেক ডানপন্থি মিলিশিয়া সদস্যকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন, যেন তারা তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য না দেন বা তাদের আগের দেওয়া সাক্ষ্য বদলে ফেলেন।

আরও পড়ুন>>

এই মামলার সূত্রপাত ঘটে ২০১২ সালে, যখন উরিবে বামপন্থি সিনেটর ইভান সেপেদার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মানহানির মামলা করেন। কিন্তু আদালত সেই মামলা খারিজ করে দিয়ে উল্টো উরিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ২০১৮ সালে।

দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ৭৩ বছর বয়সী এই সাবেক প্রেসিডেন্টের সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তার শাস্তি ঘোষণা করা হবে শুক্রবার একটি পৃথক শুনানিতে। উরিবের আইনজীবীরা এরই মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ঘোষণা দিয়েছেন।

কলম্বিয়ার বামপন্থি প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, একটি শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থা কলম্বিয়াকে সহিংসতা থেকে মুক্ত করতে পারে।

তবে উরিবের সমর্থকরা এই বিচারকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়েছেন। তারা বলছেন, এটি একটি ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’। মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিও এই রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং একে বিচার বিভাগের অপব্যবহার বলে উল্লেখ করেছেন।

উল্লেখ্য, উরিবে ২০০২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার নেতৃত্বে বহু ডানপন্থি প্যারামিলিটারি গোষ্ঠী অস্ত্র সংবরণে রাজি হয়, তবে এসব গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত। কলম্বিয়ার সত্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এই মিলিশিয়ারা প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার মানুষের হত্যায় জড়িত।

উরিবে বর্তমানে ডেমোক্রেটিক সেন্টার নামের একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং দীর্ঘদিন সংসদ সদস্য ছিলেন। বয়সজনিত কারণে তিনি সম্ভবত কারাবাসের পরিবর্তে গৃহবন্দিত্বের সাজা ভোগ করতে পারেন।

সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।