ইসরায়েলি গণহত্যা তদন্তকারী জাতিসংঘ দূতকে কানাডায় চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ
জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সন্দেহে কানাডায় প্রবেশের সময় জাতিসংঘের বিশেষ দূত ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ফক এবং তার স্ত্রী হিলাল এলভারকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কানাডার বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ)। ফক অতীতে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে তদন্ত করেছিলেন।
৯৫ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক রিচার্ড ফক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাদের একাধিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিশেষত ইসরায়েল, গাজা এবং গণহত্যা সম্পর্কিত তাদের গবেষণা নিয়ে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন তারা।
‘প্যালেস্টাইন ট্রাইব্যুনাল অন কানাডিয়ান রেসপনসিবিলিটি’ নামে দু’দিনব্যাপী একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ফক দম্পতি কানাডায় এসেছিলেন। এ সম্মেলনে গত দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কানাডার অস্ত্র রপ্তানির ভূমিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করেন।
ফকের মতে, তাদের এই জিজ্ঞাসাবাদ বিশ্বব্যাপী সমালোচনামূলক কণ্ঠগুলোকে দমন করার প্রবণতার অংশ। তিনি বলেন, সরকারগুলো এমনভাবে কাজ করছে যাতে সত্য প্রকাশের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের ভয়ভীতি দেখানো যায়।
সিবিএসএ নির্দিষ্ট এই ঘটনাটি নিয়ে মন্তব্য না করলেও জানিয়েছে, যেকোনো যাত্রীকে ‘সেকেন্ডারি ইন্সপেকশন’-এ পাঠানো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং এটি অপরাধের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা উচিত নয়।
এদিকে কানাডার সিনেটর ইউয়েন পাও উ এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে প্রশ্নবিদ্ধ করা উদ্বেগের বিষয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ফিলিস্তিনে ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থানের কারণে তাদেরকে আটকানো হয়ে থাকলে তা অত্যন্ত গুরুতর।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, কানাডা অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত ঘোষণা করলেও বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে কানাডা-নির্মিত অস্ত্র এখনও ইসরায়েলের হাতে পৌঁছাচ্ছে।
গাজায় এখনো মানবিক সংকট তীব্র আকারে রয়ে গেছে। যুদ্ধবিরতি চললেও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অন্তত ২৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফকের মতে, গণহত্যা বন্ধ হয়নি বরং ‘ধারাবাহিকভাবে ধীর গতিতে’ চলছে।
কেএম