যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি, দুশ্চিন্তা বাড়লো ভারতীয়দের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪৩ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যকলাপ খতিয়ে দেখবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর/ ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন বা ব্যাকগ্রাউন্ড নীতির ধাক্কায় ভারতীয় এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের জন্য বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটেছে। অনেকেরই নির্ধারিত সাক্ষাৎকারের সময় বদলে পরের বছর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এ বিষয়ে একটি পরামর্শ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস।

সোশ্যাল মিডিয়া ভেটিং বা ব্যাকগ্রাউন্ড চেক হলো একটি অনুসন্ধানী কৌশল যার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রোফাইল এবং কার্যকলাপ যাচাই করা। প্রাথমিকভাবে কর্মসংস্থানের আগে স্ক্রিনিং ও অন্যান্য অফিসিয়াল যাচাইয়ের জন্য এটি করা হয়।

এক বিবৃতিতে নয়াদিল্লির মার্কিন দূতাবাস বলেছে, আপনি যদি ইমেইলে আপনার ভিসা সাক্ষাৎকারের জন্য পুনঃনির্ধারণের নোটিস পেয়ে থাকেন, তাহলে মিশন ইন্ডিয়া আপনার নতুন তারিখে সেবা দিতে আগ্রহী।

সঙ্গে আরও সতর্ক করে বলা হয়েছে, পুনঃনির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়ার পর কেউ যদি আগের সাক্ষাৎকারের তারিখে কনস্যুলেটে হাজির হন, তবে তাকে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না। পূর্বনির্ধারিত তারিখে পৌঁছালে আপনাকে দূতাবাস বা কনস্যুলেটে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষ অংশে যাদের সাক্ষাৎকার নির্ধারিত ছিল, সেগুলো পরিবর্তন করে আগামী বছরের মার্চে পাঠানো হচ্ছে। ঠিক কতগুলো অ্যাপয়েন্টমেন্ট পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

এক নামী ব্যবসায়িক ইমিগ্রেশন ল ফার্মের অ্যাটর্নি স্টিভেন ব্রাউন বলেন, মিশন ইন্ডিয়া যা নিশ্চিত করেছে, তা আমাদের আগেই শোনা তথ্যের সঙ্গে মিলে যায়। সোশ্যাল মিডিয়া ভেটিংয়ের কারণে তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের বেশ কিছু অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করে মার্চে সরিয়ে নিয়েছে।

এইচ-১বি ভিসার আবেদনকারী ও তাদের এইচ-৪ নির্ভরশীলদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্প্রসারিত স্ক্রিনিং ও ভেটিং ব্যবস্থা চালু করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিসা আবেদনকারীদের সব সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের প্রাইভেসি সেটিং ‘পাবলিক’ রাখতে হবে।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) থেকে কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের অনলাইন উপস্থিতি খতিয়ে দেখবেন যে কারা অযোগ্য বা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কিংবা জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ ভিজিটরদের ক্ষেত্রে এ ধরনের যাচাই আগেই চলতো।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, প্রতিটি ভিসা জন্য ন্যায়নির্ণয় একটি জাতীয় নিরাপত্তামূলক সিদ্ধান্ত।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এই সিদ্ধান্ত এইচ-১বি প্রোগ্রামের ওপর নতুন চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন এইচ-১বি ভিসার জন্য এককালীন ১ লাখ ডলার ফি আরোপ করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ী চাকরির লক্ষ্যে আসতে চাওয়া ভারতীয় কর্মীদের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

পরে আফগান বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তির গুলিতে মার্কিন ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্য নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়। ওই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯টি দেশ থেকে আগতদের গ্রিন কার্ড, নাগরিকত্ব ও অন্যান্য অভিবাসন সংক্রান্ত আবেদনের সুযোগ স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।