কাকতাড়ুয়াদের গ্রাম ও একজন চিত্রশিল্পী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১১ পিএম, ০৬ নভেম্বর ২০১৯

জাপানে মানুষের সংখ্যা কমছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে মৃত্যুহারের চেয়ে জন্মহার নিম্নমুখী। দেশটির বেশ কিছু অঞ্চলে জনসংখ্যার এই সমস্যা একটু বেশি। তরুণ প্রজন্ম কাজের সন্ধানে ছুটছে শহরে আর গ্রামের প্রবীনদের মৃত্যু হচ্ছে। এমন সমস্যায় ভুগছে জাপানের নেগোরোও নামক এক গ্রাম।

ওই এলাকায় কমতে কমতে ত্রিশের নিচে চলে এসেছে। কিন্তু এত কম জনসংখ্যা হলেও নেগারো কিন্তু জাপানের অন্য অঞ্চলের মতো জনশূন্য নয়! কেননা গোটা গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা আছে শত শত কাকতাড়ুয়া। যেগুলো দেখে পর্যটকরা মানুষের উপস্থিতি টের পান।

জাপানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বলছে, দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত নেগোরো গ্রামের নানান প্রান্তে প্রায় ৩৫০টি কাকতাড়ুয়া তৈরি করে রাখা হয়েছে। সুসকিমি আয়ানো নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা ও চিত্রশিল্পী ২০০২ সালে নিজের গ্রামে ফিরে এসব তৈরির কাজ শুরু করেন।

চিত্রশিল্পী সুসকিমি জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন জাপানের ওসাকা নগরীতে। একটা সময় তিনি খেয়াল করেন, তার জন্মস্থান নেগারোতে মানুষ কমতে কমতে ধীরে ধীরে তা ভূতুরে এক এলাকায় পরিণত হচ্ছে। তিনি এই সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ হিসেবে গ্রামে ফিরে এলেন।

সুসকিমির বাবা ছিলেন কৃষক। তিনি ভাবলেন, বাবার মতো বাগানের পাখিদের দূরে রাখতে কাকতাড়ুয়া তিনিও তৈরি করবেন। সুসকিমি শত শত কাকতাড়ুয়া বানানো শুরু করলেন। ভাবলেন, আমি যদি এসব বানিয়ে করে বিভিন্ন স্থানে সাজিয়ে রাখি তাহলে আমার গ্রাম আর জনশূন্য থাকবে না।

যেই ভাবনা সেই কাজ। তারপর শুরু হলো সুসকিমির মানুষের মতো অবয়ব দিয়ে কাকতাড়ুয়া তৈরির কাজ। খড় দিয়ে তৈরি সেস কাকতাড়ুয়াতে আঁকলেন মানুষের মুখ। এরপর সেগুলো রাস্তার পাশে, বাড়ির বাগানে, পরিত্যক্ত ক্লাস রুমে রাখতে শুরু করলেন।

গ্রামে সত্যিই মানুষের সমাগম শুরু হলো। তার তৈরি শিল্পকর্ম দেখতে হাজারো মানুষ প্রতিদিন ভিড় জমাতে শুরু করলেন নেগেরোতে। প্রতি বছর এপ্রিল-নভেম্বনে কাকতাড়ুয়া তৈরির কর্মশালার আয়োজন করেন সুমকিমি। তারপর অক্টোবর জুড়ে হয় ওই গ্রামে কাকতাড়ুয়া উৎসবের আয়োজনও হয়।

এসএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।