২০২৪ এর আগে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়
মহামারি করোনার কারণে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ব্যাপক সংকুচিত হয়েছে। ভাইরাসটির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জারি লকডাউনের আগে দেশটির অর্থনীতির যে আকার ছিল ২০২৪ সালের আগে সেই ঘাটতি পূরণ হবে না বলে ই ওয়াই আইটেম ক্লাব নামের একটি অর্থনীতি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান পূর্বাভাস দিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়ে বলা হচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয় যে মডেল ব্যবহার করেছে ওই প্রতিষ্ঠানটিও একই মডেল ব্যবহার করে পূর্বাভাস দিয়েছে, করোনায় অর্থনীতির সংকোচনের কারণে আগামী দিনে যুক্তরাজ্যের বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ শতাংশে গিয়ে ঠেকবে।
প্রতিষ্ঠানটির অনুমান এ বছরে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ১১ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হবে। যা এক মাসে আগে দেওয়া ৮ শতাংশের পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক বেশি। তারা বলছে, ধারণার চেয়েও ভোক্তারা এখন বেশি সতর্ক। এছাড়া লকডাউনের কারণে দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের প্রবৃদ্ধিও কমে গেছে।
লকডাউনে ভোক্তা চাহিদা হ্রাসসহ অর্থনীতির অন্যান্য খাতে শ্লথগতির উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে, এর আগে করোনা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য যে সময়সীমার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল প্রকৃতপক্ষে সেই পুনরুদ্ধার হতে তার চেয়েও অতিরিক্ত দেড় বছর সময় বেশি লাগবে।
তবে গত সপ্তাহে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যান্ডি হেলডেন বলেন, গত মার্চ ও এপ্রিলে লকডাউনের কারণে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির আউটপুট প্রায় অর্ধেক হ্রাস পেয়েছে। তিনি অর্থনীতি পুনরুত্থানে ‘ভি-শেপড’ ক্যাটাগরি অর্থাৎ দ্রুত পুনরুদ্ধার হবে বলে জানিয়েছিলেন তখন।
তবে দ্রুত অর্থনীতির এমন পুনরুদ্ধার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য অর্থনীতিবিদেরা। ই ওয়াই আইটেম ক্লাবের যুক্তরাজ্যের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হওয়ার্প আর্চার বলেন, ‘লকডাউন নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়া সত্ত্বেও ধারণার চেয়েও ভোক্তাদের ব্যয়ের ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্ক দেখা যাচ্ছে।’
সরকার অর্থনীতির মন্দাবস্থা ঠেকাতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে ইতোমধ্যে। ট্যাক্স মওকুফ, মজুরির জন্য নগদ অর্থ সহায়তা ছাড়াও ইনসেন্টিভ দিয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক পর্যটন খাতে মূল্য সংযোজন কর ছাড় ছাড়াও এসব খাতের কর্মীদের হাজার ইউরো বোনাসের ঘোষণা দেন।
অর্থ পেলে খরচ বাড়বে,তাতে গতি পাবে অর্থনীতি, এমন উদ্দেশ্য এই পদক্ষেপের। তবে সবার চাকরি যে রক্ষা করা যাবে না সুনক সে ঘোষণাও দিয়ে রেখেছেন। এছাড়া তার তিন হাজার কোটির প্যাকেজ শুধু রেস্তোরাঁ ও পর্যটন শিল্প ছাড়া অন্য কোনো খাতে কাজে লাগছে বলে সমালোচনাও রয়েছে।
করোনায় প্রথম থেকেই হাজার কোটি ইউরো প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতির শ্লথগতি ঠেকানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাজ্য। গত মাসেও ব্যাংক অব ইংল্যান্ড অনাকাঙ্ক্ষিত করোনা সংকটে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার লড়াই হিসেবে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি এক হাজার কোটি ইউরো প্রদানের ঘোষণা দেয়।
এসএ