ছাত্রদল নেতার বাড়িতে লুটপাট
শেখ হাসিনা, মহীউদ্দীনসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ঢাকার মিরপুরে সাবেক ছাত্রদল নেতার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদন্নবী গত ২৬ অক্টোবর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এসআই মাহমুদন্নবী জাগো নিউজকে বলেন, আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষ ও আইনজীবীরা এই শুনানিতে উপস্থিত থাকবেন।
মামলায় ঘটনা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
বাদী জান্নাত আরা ফেরদৌসের স্বামী মোহাম্মদ শামীম পারভেজ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। তিনি সাবেক ছাত্রদল নেতা এবং মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) ছিলেন। শামীম পারভেজের রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে বাদীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
এ সময় শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নির্দেশে অপর আসামিরা ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে প্রতিটি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এই ঘটনায় ২২টি ল্যাপটপ, ১৭টি স্মার্টফোন, আনুমানিক ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ নয় লাখ টাকা লুট করা হয়। এছাড়া নাবালকসহ ৫৪ জন ভাড়াটিয়াকে আটক ও মারপিট করা হয়।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ, মিরপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন শেখ হাসিনা, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান আব্দুল মান্নান (৬২), মীর জসিম উদ্দিন (৬০), তৌহিদুল ইসলাম খান শিপলু (৩১), এস.এম কিবরিয়া পিয়াস (৩৭), মোঃ মামুন মিয়া ওরফে শাহজাহান (৪১), মনসুর আলী (৪৬), ইসলাম ওরফে নিক্কন (৫১), ধামম্মাদ নুরুল হক (৫৮), আব্দুল হামিদ ওরফে লিটন ওরফে বগা লিটন (৪৮), বিপুল পাটোয়ারী (৩৬), মোঃ মিজানুর রহমান আখন (৪০), জিয়াউল হাসান জিয়া (৩৩), মোঃ শহিদুল ইসলাম রজব (৪০), আনোয়ার হোসেন আনু (৪১), ইয়ানুহা চৌধুরী (৪৫), এম. আয়নাল আহামেদ (৫৬), জালাল দেওয়ান (৫০), মোঃ সাঈদ ইকবাল ওরফে ভাস্কর (৩২), মোঃ সামসুল হক (৬৪), মোঃ ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রধান (৬৫) ও মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৮)।
মামলার অভিযোগ সম্পর্কে এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, বিষয়টি শুধু সম্পত্তি লুটপাটের মামলার বাইরে রাজনৈতিক প্রভাবকেও প্রভাবিত করেছে। মামলার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বাদীর পরিবার রাজনৈতিকভাবে প্রতিহিংসার শিকার হয়েছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহমুদন্নবী বলেন, অভিযোগপত্রে নির্দেশ করা হয়েছে, এসব কর্মকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে এবং সাবেক রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এই প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বাদী জান্নাত আরা ফেরদৌস জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০১৪ সালে বাড়িতে হামলার পর আমাদের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাদের ব্যবসা ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এখন আমরা ন্যায়বিচার চাই।’
এমডিএএ/এমএমএআর/এমএস