জাতীয় নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা রিট খারিজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৭ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
হাইকোর্ট/ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট আবেদন ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আদালত বলছেন—যেহেতু নির্বাচনের একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে, এ পর্যায়ে এসে রিট শুনানি করা ঠিক হবে না। তাই রিটটি নটপ্রেস (উত্থাপিত হয়নি) মর্মে রিজেক্ট করা হলো।

গত ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষে দলটির মহাসচিব আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বিবাদী করা হয় রিটে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে দেশে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা ওই রিট আবেদনে বলা হয়, নির্বাহী বিভাগের ব্যক্তি দিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও নির্বাচন পরিচালনা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিচার বিভাগের মতো স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনেরও নিজস্ব জনবল থাকতে হবে। সংবিধান অনুসারে নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।

সেখানে বলা হয়, কিন্তু সংবিধান লঙ্ঘন করে প্রতিটি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাহী বিভাগকে দেওয়া হয়। নির্বাহী বিভাগ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের চাহিদা অনুসারে নির্বাচন পরিচালনা করে। ফলে নির্বাচন নিয়ে নানামুখী বিতর্ক তৈরি হয়।

বর্তমানে নির্বাহী বিভাগ তাদের আস্থা, গ্রহণযোগ্যতা ও দায়িত্ববোধ হারিয়ে ফেলেছে। তাদের দ্বারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে—এটি কেউ বিশ্বাস করে না। এমতাবস্থায় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব লোকবল থেকে সচিব, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

জাতীয় নির্বাচনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পরিবর্তে জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পরিবর্তে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—রিটে এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়।

এছাড়া নিজস্ব পদোন্নতি পদ্ধতির মাধ্যমে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের থেকে ইসি সচিব নিয়োগের পরিবর্তে নির্বাহী বিভাগ থেকে ইসি সচিব নিয়োগ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—এ বিষয়েও রুল জারির আর্জি জানানো হয় রিটে।

পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে নিয়োগ দিতে এবং নিজস্ব পদোন্নতি পদ্ধতির মাধ্যমে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের থেকে ইসি সচিব নিয়োগের লক্ষ্যে ‘ইলেকটোরাল সার্ভিস কমিশন’ প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়েও রুল চাওয়া হয়।

রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় নির্বাচন আয়োজনের পরবর্তী সব কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে।

রিটকারী আইনজীবী ইয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে ডিসিদের সঙ্গে নির্বাচনের ব্যাপারে মতবিনিময় করেছে। ডিসিদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তাদের আবারও এ দায়িত্ব দিলে আরেকটি প্রভাবিত নির্বাচন হবে।

তিনি বলেন, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন সচিবকে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন আদৌ সম্ভব নয়। 

এফএইচ/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।