সমাধানের পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারক ও আইনজীবী সমিতির দ্বন্দ্ব

মুহাম্মদ ফজলুল হক
মুহাম্মদ ফজলুল হক মুহাম্মদ ফজলুল হক , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩
জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারক ও আইনজীবী সমিতির দ্বন্দ্ব সমাধানের পথে। জেলা জজসহ দুই বিচারকের অপসারণ এবং নাজিরের শাস্তির দাবিতে টানা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে রোববার (১৫ জানুয়ারি) থেকে আদালতে ফিরেছেন আইনজীবীরা। কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেও দু’টি আদালতে যাবেন না বারের আইনজীবীরা। তারপরও সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে বিচারের আশায় থাকা সাধারণ মানুষের মনেও স্বস্তি ফিরেছে।

জানা গেছে, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে টানা আদালত বর্জনের কর্মসূচি থেকে ফিরে এসেছেন আইনজীবীরা। তবে, জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের বদলির আগ পর্যন্ত ওই দু’টি আদালত বর্জন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়া নাজিরকেও বদলির দাবি তুলেছেন আইনজীবীরা।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দূর করে একটি সৌহাদ্র্র পূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিম্ন আদালতে এমন ঘটনা নতুন নয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত তার প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গত বছর খুলনায় এমন একটি ঘটনা ঘটে। বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীদের অসৌজন্যমূলক আচরণকে ভবিষ্যতে ক্ষমা করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সে সময় খুলনায় জেলা জজ আদালতের এক বিচারকের সঙ্গে তিন আইনজীবীর অসদাচরণের ঘটনা ঘটে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৩ নভেম্বর শুনানিতে আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এমন সতর্কবার্তা দেন। সেইসঙ্গে সব জেলা আইনজীবী সমিতিকে এই বার্তা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ফের কর্মচঞ্চল ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতপাড়া 

এছাড়া পৃথক ঘটনায় পিরোজপুরের পাবলিক প্রসিকিউটরকেও (পিপি) তলব করে সতর্ক করা হয়েছিল। গত ১৫ নভেম্বর পিরোজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিনকে সতর্ক করে ক্ষমা করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, পিরোজপুরের পিপি একজন বিচারকের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্ক। বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্ক। এ ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।

খুলনা বারের সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গত বছর নিজের এক জুনিয়র আইনজীবীর জমির খতিয়ান সংশোধন করতে মামলা করেছিলেন খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে। বিচারক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তা দিতে পারেননি সাইফুল। এরপর আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করলে সাইফুল সময় চান। আবেদন খারিজ হলে এজলাসেই বিচারককে গালাগাল করেন তিনি। জেলা জজ গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পাঠালে প্রধান বিচারপতি তা নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।

অন্যদিকে কুষ্টিয়া বারের সভাপতি নূরুল ইসলাম দুলাল গত বছরের ২ মার্চ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি জামিনের আবেদন নিয়ে যান। ওই জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে ক্ষেপে গিয়ে বিচারককে হুমকি দেন তিনি। বিচারকও তাৎক্ষণিক এজলাস থেকে নেমে যান। পরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি মীমাংসা করেন।

অর্থ আত্মসাৎ মামলার এক আসামি গত বছরের ২৫ জুলাই জামিন নিতে পিরোজপুর আদালতে গেলে দু’পক্ষের আইনজীবীরা বিবাদে জড়ান। একপর্যায়ে পিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের তখনকার প্রচার সম্পাদক খান মো. আলাউদ্দিন ওই আদালতে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। পরে বিচারক মামলাসংশ্লিষ্ট আইনজীবী ছাড়া অন্যদের চলে যেতে বলেন। এরপরও পিপি থাকতে চাইলে বিচারকের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পিপি বিচারককে গালাগাল করেন। পরে হাইকোর্ট পিপিকে তলব করলে তিনি হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে রেহাই পান।

বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্যবিধির কারণে এক আইনজীবীকে বেরিয়ে যেতে বলায় ওই আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। তবে ২০ মিনিট পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

jagonews24ফের কর্মচঞ্চল ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতপাড়া-ছবি জাগো নিউজ

এমন করে ঘটনার পর ঘটনা ঘটায় সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় সেটি সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করে। সরকারের টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের মাধ্যমে ওই ভিডিও সরিয়ে নেওয়া হলেও তার রেশ থেকে যায়। ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় বিচারকদের বিভিন্ন সংগঠন। যদিও এ বিষয়ে আইনজীবীরা মুখ খোলেননি।

ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনসহ বিচারকদের কয়েকটি সংগঠন। বিচার বিভাগীয় অনেক কর্মকর্তা ফেসবুকে তাদের প্রোফাইলে কালো ছবি দিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে গত শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিবৃতি দিয়েছে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এতে বলা হয়েছে, কতিপয় আইনজীবী এজলাসকক্ষে বেআইনিভাবে বিচারিক কাজে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করেন। একই সঙ্গে তারা বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত ও অশালীন আচরণ করেন, যা অনভিপ্রেত, ন্যক্কারজনক ও দুঃখজনক। এতে বিচার বিভাগের মর্যাদা ও সম্মান মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের নিন্দনীয় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী গত ২৭ ডিসেম্বর জেলা জজদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কোনো অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত করা যাবে না। কোনো বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটলে তা জানাতে বলেন তিনি।’

এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন বিচারকের সঙ্গে কথা বলেও তাদের ক্ষোভের কথা জানা যায়। তবে সঙ্গত কারণে কেউ প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। ক্ষোভ জানান অবসরপ্রাপ্ত একাধিক বিচারকও।

উচ্চ আদালত প্রথমে তিন আইনজীবীকে তলব করার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক বিচারকের (জেলা জজ) বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে আরও ২১ আইনজীবীকে তলব করেন হাইকোর্ট। তাদের আগামী ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিজেদের আচরণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: রোববার থেকে আদালতে যাবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা 

এসব ঘটনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘এখন মিডিয়ার সংখ্যা বেড়েছে, মিডিয়া ছাড়াও যেকোনো ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচার হয়। তার জন্যে যে কোনো ঘটনা দ্রুত প্রকাশ হয় এবং মানুষজন বেশি বেশি জানে। এমন ঘটনা আগেও ঘটতো। তখন মিডিয়া জানত না, আর সেটা এতো গুরুত্ব পেত না। এখন যেখানেই হচ্ছে, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিচারকের বিচার করার স্বাধীনতা আছে। বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবী সমাজ দুর্ব্যবহার করে না; এক-দুজন যারা করে, তাদের আমরা প্রশ্রয় দেই না। বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকলে যাদের মামলা, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হন।’

আরও পড়ুন: বিচার বিভাগ স্বাধীন, আদালত বিচার করবেন: আইনমন্ত্রী 

আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডেভোকেট এএম আমিন উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। আমি একজন আইনজীবী হিসেবে এটা কখনই আশা করিনি। আইনজীবী হিসেবে আমি নিজেই লজ্জিত। আদালত প্রাঙ্গণে যা ঘটেছে আমি আশা করি এটার সুষ্ঠু সমাধান হবে। আদালত এটা শুনানি করে একটা আদেশ দেবেন ভবিষ্যতে সতর্ক হবে এবং সঠিকভাবে যেন চলতে পারে এর একটা নির্দেশনা থাকবে।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ৫৩ সহকর্মীর অভিযোগ 

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার প্রধান প্রসিকিউটর এবং সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, বার কাউন্সিল এ বিষয়ে আগের চেয়ে সচেতন। বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্কের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বারের) সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির জাগো নিউজকে জানান, লয়ার এবং লার্নার জুডিসিয়ালি একে অপরের পরিপূরক সুন্দর একটা পরিবেশ থাকাটা বাঞ্ছনীয়। মিথ্যা রটানো ঠিক নয়। যারা এগুলো করছে তাদের সুন্দর মন নিয়ে সামনের দিকে এগোনেই ভালো। এটা জুডিসিয়ালের জন্য ভালো হবে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি আরও বলেন, ‘এগুলো বিভিন্ন সময়ে হয়। তবে আমরা চাই, যাতে এসব আর না হয়। চেষ্টা করছি সমাধানের জন্য। আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে।’

jagonews24দুটি বাদে সব আদালতের শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবীরা-ছবি জাগো নিউজ

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের বিরুদ্ধে স্লোগান: ২১ আইনজীবীকে তলব 

বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জাগো নিউজকে বলেন, যেহেতু আমাদের আইনের শাসনের দুর্বলতা দেখা দিয়েছে ধীরে ধীরে এটা বাড়ছে সেই কারণে এই সব ঘটনা ঘটছে। দেশের বিভিন্ন বারে যে আইনজীবীরা আছেন বিশেষ করে যারা দলের সাথে সম্পর্কযুক্ত, বিভিন্ন পাবলিক প্রসিকিউটর আছেন দল করেন, দলের সম্পাদক-সভাপতি তাদের এক ধরনের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্যে প্র্যাকটিক্যাল যে অবস্থা সেই ব্যবস্থাকেই মনে ধারণ যে তারাই সবকিছু। এরকম তারা প্রশাসনের ওপর করতে পারেন বা অন্যান্য বিরোধী দলের ওপর স্টিমরোলার চালাতে পারেন বা তাদের ইচ্ছামতো সবার ওপরেই করতে পারেন।

আরও পড়ুন: চড় মেরে ‘স্যরি’ বলে দুঃখপ্রকাশ 

তিনি আরও বলেন, একজন বিচারক যদি কোনো অন্যায় করেন তা হলে তার বিরুদ্ধে তো অভিযোগ করার জায়গা আছে। কারণ বর্তমান প্রধান বিচারপতি বিভিন্ন জেলা ও বিভাগ ভাগ করে বিচারকদের ওপর মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। যেটা আগে শুধু কোর্টের ভ্যাকেশনে হতো। এখন পারমানেন্টলি হচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বারের) সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলাল জাগো নিউজকে বলেন, এটা সেনসিটিভ ইস্যু। অভিন্ন সম্মানের বিষয়। বিচারকের সম্মান গেলে আইনজীবীরও সম্মান যায়। আইনজীবীদের সম্মান যদি যায় বিচারকেরও সম্মান যায়। আর আমাদের উভয়ের সম্মান যদি যায় তাহলে বিচার বিভাগের সম্মান যায়। সে কারণে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কোনো রকম মন্তব্য করিনি। ফেসবুকেও কোনো পোস্ট করিনি।

তিনি জানান, আমরা ইন্টেনশনালি নিবৃত্ত ছিলাম। কিন্তু জেলা জজদের পক্ষ থেকে কিছু কিছু স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। শুরু থেকে চেষ্টা করছি একটা সুষ্ঠু শন্তিপূর্ণ এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ একটা সমাধান যেন হয়। সে লক্ষ্যে আমার কাজ অব্যাহত আছে। চেষ্টা করছি, আশা রাখছি একটা চমৎকার সমাধান হবে। আমাদের সকলের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জুডিশিয়ারি যেন কোনোভাবে নষ্ট না হয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, দেশে সুশাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। এ জন্যই এ রকম হচ্ছে। সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে চলতে দিচ্ছে না।

আরও পড়ুন: বিচারকের সই-সিল জালিয়াতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার 

তিনি বলেন, বার কাউন্সিলের উচিত ছিল যে সব আইনজীবী বিচারকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া। প্রথমে টেম্পোরারি বাতিল করে তারপরে বিচার করে নিয়ম অনুযায়ী বহিষ্কার করা। বাংলদেশের বার কাউন্সিলের সেই অধিকার আছে, ল’ ইয়ারদের প্রতি সুয়োমোটো রুল ইস্যু করা। লন্ডনের বার কাউন্সিল আইনজীবীদের মন্দ আচরণের কারণে প্রতি বছর পাঁচজন আইনজীবীকে পেশা থেকে বাদ দেন বলেও জানান তিনি।

সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাসদার হোসেন বলেন, ‘আগে কোনো দিন বিচারকদের সঙ্গে এ রকম হয়নি, এখন কেন হচ্ছে? আমাদের নৈতিকতা বোধ, দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি— এসব কারণে। কেউ কাউকে এখন মানুষ মনে করে না। কেউ কাউকে মানে না, সততা নেই। সবারই নেতা হওয়ার শখ।’

সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট সব সময়ই তৎপর। অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট সব সময়ই চায়, বার ও বেঞ্চের সম্পর্ক ভালো থাকুক। নইলে সঠিকভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিচারপ্রার্থীরা।’

এফএইচ/এসএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।