অনুসন্ধানে সহযোগিতায় গোলাপকেই নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) নামে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। অনুসন্ধান শেষে আগামী চার মাসের মধ্যে দুদককে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ওই আদেশের অনুলিপি প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। আদেশের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। তিনি জানিয়েছেন এখন নির্দেশনা অনুযায়ী অনুসন্ধান কাজ করবেন।
আদেশে আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক বাড়ির বিষয়ে দুদক ও বিএফআইইউকে অনুসন্ধানে সহযোগিতা করতে গোলাপকেই নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন>>>যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি: দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। সেই সঙ্গে আগামী দুই মাসের মধ্যে দুদককে অনুসন্ধানের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
পরে আইনজীবীরা সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে ৯টি বাড়ি কেনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অনুসন্ধানের জন্য সহযোগিতা করতে এমপি আবদুস সোবহান মিয়াকে (গোলাপ) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) নামে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অনুসন্ধান শেষে দুদককে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, অনুসন্ধান শেষে অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে দুদক রিট আবেদনকারীকে অবহিত করবে। দুদক চাইলে নির্বাচন কমিশনসহ সব বিবাদীরা অনুসন্ধান কাজে সংস্থাটিকে সহযোগিতা করবে।
ওইদিনও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান রিপোর্ট ৪ মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট বলেছিলেন, দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেন, কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্নতা হবে না।
এর আগে গত রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে গোলাপের ৯টি বাড়ি কেনার বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।
আরও পড়ুন>>> যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি: অনুসন্ধান শুরু করবে দুদক
এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, এনবিআর চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে বিবাদী করা হয়।
তথ্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অরগানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান মিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে একাধিক বাড়ি কিনেছেন, যা নির্বাচনী হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেননি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সোবহান মিয়া ২০১৪ সালে প্রথম নিউইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। ওই বছর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউইয়র্কে একে একে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)।
এফএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম