যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি: অনুসন্ধান শুরু করবে দুদক

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) নামে যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
দুদক কমিশনার বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অবশ্যই মানবো। আদালতের আদেশ মানতে আমরা বাধ্য। সংবিধান অনুসারে যে কারও আদালতের নির্দেশনা মানা বাধ্যতামূলক। আদালত যে আদেশই দিক সেটা প্রতিপালন করার আপ্রাণ চেষ্টা করবো। আমরা আদেশ এখনো পাইনি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি হয়, আমরা চেষ্টা করবো। যদি সময়ের মধ্যে না পারি, তাহলে আদালতে কাছ থেকে সময় চেয়ে নেবো।’
এর আগে এদিন সকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ আবদুস সোবহান গোলাপের যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে ৯টি বাড়ি কেনার বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দুদককে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন>> যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি: দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক শুনানি করেন।
এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি দেশে-বিদেশে অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ দুদকে চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ওই সময় তিনি বলেন, ‘মাদারীপুরের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের বিষয়ে আমি একটা ভিডিও করেছি। অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের একটি প্ল্যাটফর্ম। এক প্রতিবেদনে ওসিসিআরপি তার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। এখন আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ ২০১৪-১৫ সালে যখন এমপি ছিলেন তখন কী পরিমাণ দেশসেবা করেছেন যে, সেবা করতে করতে নিউইয়র্কে ৯টি প্রপার্টিজ করেছেন। যেগুলো তার নিজের নামে আছে এবং এখন পর্যন্ত তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেননি।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, অন্য কোনো দেশে একাধিক বাড়ি কেনার তথ্য ২০১৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় গোপন করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট বলেছে, বিষয়টি দুদক দেখবে।’
আরও পড়ুন>> এমপি গোলাপের বিরুদ্ধে দুদকে ব্যারিস্টার সুমনের অভিযোগ
সেদিন সাংবাদিকদের দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘উনি (ব্যারিস্টার সুমন) আমার হাতে অভিযোগ দেননি তো, আমি জানি না। অভিযোগ তো যে কেউ দিতে পারেন। অভিযোগ আসার পরে যাচাই-বাছাই কমিটি যাচাই করে দেখবে তা দুদকের তফসিলভুক্ত কি না। যদি পড়ে (তফসিলভুক্ত হয়) তাহলে সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কমিশন বরাবর উপস্থাপন করা হবে। প্রাপ্ত বিধিবিধান পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএম/ইএ/এমএস