বিচারব্যবস্থার মূল সমস্যা বিলম্বিত বিচার: বিচারপতি বসির উল্লাহ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:০৮ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২৩

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ বলেছেন, ‘আমাদের দেশে বিচারব্যবস্থার মূল সমস্যা হচ্ছে বিলম্বিত বিচার। অনেক ক্ষেত্রে কোর্টের আদেশ ও নথি দ্রুত সময়ে সংশ্লিষ্ট স্থানে না পৌঁছানো।’

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবসে নিজের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন এ এন এম বসির উল্লাহ।

অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর দুলাল, সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এনামুল হক মোল্লাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

৪১ বছরের বিচারিক জীবন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার অবসরে যান এএনএম বসির উল্লাহ। মোট বিচারিক জীবনের ১৩ বছর হাইকোর্টে এবং বাকিটা সময় অধস্তন আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ও আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা জানানোয় নিজের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করতে গিয়ে বিচারপতি বসির উল্লাহ বলেন, বিলম্বিত বিচার প্রসঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে ২৫ জানুয়ারি সংসদে যা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আপনারা তা জানেন। কিন্তু তার এ কঠিন উপলব্ধির প্রায় ৪৮ বছর পরও অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না।

বিচারপতি বসির উল্লাহ বলেন, বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগে প্রায় ৫ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। এ বিভাগে যে সংখ্যক বিচারপতি আছেন, তারা যদি শুধু এ মামলাগুলো নিষ্পত্তি করেন তাতেও ১০ বছর সময় লেগে যেতে পারে। কিন্তু শুধু বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তি করলে চলবে না, প্রতি বছর গড়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার মামলা হাইকোর্ট বিভাগে যুক্ত হচ্ছে। সে মামলাও নিষ্পত্তি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার বিবেচনায় নিষ্পত্তি হার বাড়াতে হলে সর্বপ্রথম বিচারপতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে হবে। এছাড়া অন্তবর্তীকালীন যে আদেশ আমরা দিই, হতে পারে সেটি স্থগিতাদেশ বা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা। এ অন্তবর্তীকালীন আদেশ কোনোভাবেই সীমাহীন সময়ের জন্য চলতে দেওয়া উচিৎ নয়। তার একটি সর্বোচ্চ সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। সেটি হতে পারে, ৫ কিংবা ১০ বছর। এ সময়সীমার মধ্যে মূল প্রসিডিংয়ের শুনানি বা নিষ্পত্তি না করলে অন্তবর্তীকালীন আদেশের কার্যকারিতা লোপ পাবে। এই রকম বাধ্যবাধকতা থাকলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মামলা শুনানি করার তাগিদ অনুভব করবে।

১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করেন বসির উল্লাহ। ১৯৮১ সালে মুনসেফ হিসেবে বরিশালে যোগদানের মাধ্যমে বিচারিক জীবন শুরু করেন। ২০১০ সালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ পদে থাকা অবস্থায় হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১২ সালে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথগ্রহণ করেন তিনি।

এফএইচ/এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।