র্যাব সেজে ছিনতাই: পাঁচ আসামি রিমান্ডে

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে র্যাব পরিচয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাইয়ে জড়িত পাঁচজনের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- সুমন মিয়া, মাসুদ মিয়া, আশরাফুল ইসলাম ওরফে আপেল, ইকবাল হোসেন ও সাইদুল হক।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আদালতের মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই এশারত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক তাদের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোহাম্মদপুরের টাউনহল এলাকায় ইউসিবি ব্যাংকের সামনে গাড়ি নিয়ে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চক্রটি মূলত ব্যাংক থেকে টাকা তোলা বা টাকা জমা দিতে যাওয়া ব্যক্তিদের টার্গেট করে। তিন মাসে তারা ২৫-৩০টি ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনায় হাতিয়ে নিয়েছে অন্তত ১০ কোটি টাকা।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া নম্বর প্লেট লাগানো প্রাইভেটকার, চারটি ভুয়া নম্বরপ্লেট, র্যাবের দুটি কালো জ্যাকেট, একটি ক্যাপ, একটি খেলনা পিস্তল, হাতকড়া, একটি লাঠি ও পুলিশের দুটি স্টিকার জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর পৌনে ২টার দিকে মোহাম্মদপুরের রিং রোডের ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে পূবালী ব্যাংকে জমা দিতে যাচ্ছিলেন মো. ইসরাফিল। সে সময় হঠাৎ তার সামনে দাঁড়ায় একটি প্রাইভেটকার। র্যাবের জ্যাকেট পরা দুই ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে মারধর করে ব্যাগে থাকা ৫ লাখ ৪৫ হাজার এবং পকেটের আড়াই হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে শেরেবাংলা নগরে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভগ্নিপতি মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে এমন আরও কয়েকটি ছিনতাইয়ের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় শ্যামলীর ডাচ-বাংলা ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকের আশপাশের এলাকা ও আসামিদের যাত্রাপথের প্রায় ২০০ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি সন্দেহজনক গাড়ির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। কয়েক ব্যক্তির সন্দেহজনক গতিবিধিও লক্ষ্য করা যায়। একপর্যায়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ভেতরে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের অবস্থান পাওয়া যায়। পরে প্রযুক্তির সহায়তা ও সোর্সের মাধ্যমে জড়িত চক্রটিকে শনাক্ত করা হয়। চক্রটি ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোয় দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরা ব্যক্তিদের র্যাব পরিচয়ে গাড়িতে তুলে সর্বস্ব লুট করত।
জেএ/এমএইচআর/জেআইএম