কমদামে মাংস বিক্রি করায় খলিলকে হত্যার হুমকি, কারাগারে ২ জন
মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার দুই আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এর আগে তাদের দুদিনের রিমান্ড শেষ হয়। তারা হলেন মো. নুরুল হক ও মোহাম্মদ ইমন।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. ওমর ফারুক তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার আদালতে হাজির করা হয় আসামিদের। তখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক ওমর ফারুক সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকি আল ফারাবী দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও বাদীকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। এছাড়া তারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে মোবাইলে হত্যার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন বলে স্বীকার করেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় ওই দুজনের বিরুদ্ধে। ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন, আসামিদের সহযোগী ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতার, অপরাধী চক্র শনাক্তসহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং বাদীকে হুমকি দেওয়া মোবাইল ও সিম উদ্ধারের জন্য তাদের পুলিশ হেফাজতে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশ্যে সাতদিন রিমান্ড প্রয়োজন।
র্যাব জানায়, কম দামে মাংস বিক্রি করায় খলিলুর রহমান ও ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রেতাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেন মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে ১৮ জানুয়ারি খলিলকে ফোন করে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবিও করা হয়। এছাড়া কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে ও তার ছেলেকে দুদিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০ জানুয়ারি খলিলুর রহমান শাজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর শনিবার রাতে র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-৩ ও র্যাব-৪-এর একটি দল আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন দায় স্বীকার করেন বলে জানায় র্যাব।
গ্রেফতার নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের চারিগ্রাম এলাকায় ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসা করতেন। পরিচিত এক ব্যক্তিকে খলিলকে ফোনে হত্যার হুমকি দিতে বলেন তিনি। বিনিময়ে তিনি ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসা ঠিক করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। নুরুলের কথামতো খলিলকে ফোনে হুমকি দেন ইমন।
গ্রেফতার নুরুলের নামে ঢাকার আশুলিয়া থানায় হত্যার হুমকি, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটির বেশি মামলা রয়েছে বলে জানায় র্যাব। আর ইমন দীর্ঘদিন ধরে নুরুলের ডিশের ব্যবসার কাজে সহায়তা করতেন।
র্যাব আরও জানায়, মাংস ব্যবসায়ী খলিল তার ‘খলিল গোস্ত বিতানের’ মাধ্যমে ১৯ নভেম্বর থেকে ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি মাংস বিক্রি শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে যা সাড়া ফেলে। এরপর আরও কিছু ব্যবসায়ী প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি শুরু করেন। ২২ ডিসেম্বর ভোক্তা অধিদপ্তর মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
এরমধ্যে মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা কিছুদিন আগে রাজশাহীর বাঘার আড়ানি হাটে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় এক ব্যবসায়ীকে খুন করে।
জেএ/জেডএইচ/জিকেএস